ইতিহাসের সূত্র ধরে সংহতির বার্তা শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে
ছবি টিভি থেকে নেওয়া

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের ঐতিহাসিকতা ব্যাখ্যা করে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে বলেছেন, সংহতির বার্তা নিয়ে তিনি এসেছেন।

‘মুজিব চিরন্তন’ উৎসবের তৃতীয় দিন আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারের অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজাপক্ষে। অনুষ্ঠানস্থলে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড–১৯ সংক্রমণের কালে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সংহতি জানাতে আমি সশরীর এখানে এসেছি। দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতার প্রতিফলনও আমার এই সফর।’

রাজাপক্ষে বলেন, ‘বাংলা নামের জনপদ থেকে প্রথম অভিবাসী আমাদের দেশে পৌঁছায় দুই হাজার বছর আগে। আর বাংলার সঙ্গে সিংহলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে।’ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা যে সামনের কাতারে ছিল, তার উল্লেখও করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর অর্জন ও ত্যাগ নিয়েও কথা বলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির’ কবিতার কয়েকটি চরণ ইংরেজিতে পড়ে শোনান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারা জীবনের ব্রত ছিল বাংলাদেশের জনগণ, তাদের ভাষা আর কল্যাণ। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয়ী ছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, তা তিনি পুরোপুরি দেখে যেতে পারেননি।

তবে বাংলাদেশের বর্তমান অর্জনের প্রশংসা করে রাজাপক্ষে বলেন, ‘দারিদ্র্য আর দুর্যোগকে জয় করে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে যাচ্ছে। ৫০ বছর আগে জন্ম নেওয়া একটি রাষ্ট্রের এই অর্জনে বাংলাদেশের সরকার আর জনগণকে ধন্যবাদ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সুনীল অর্থনীতির প্রস্তাব আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়।’

আরও পড়ুন

বাংলাদেশেকে দক্ষিণ এশিয়ার ‘অর্থনৈতিক প্রাণশক্তি’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, পূর্বপুরুষের ত্যাগের কারণে বাংলাদেশ আজ এখানে দাঁড়িয়ে। বাংলাদেশের জনগণের বৃহত্তর স্বাধীনতা আর অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় শ্রীলঙ্কা পাশে আছে।

অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হওয়ার একটু পরই ইশারা ভাষার মাধ্যমে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পড়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান উপলক্ষে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ভি লাভরভের একটি ভিডিও বার্তা দেখানো হয়।

‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’ প্রতিপাদ্যের এই অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ‘চিরকালের বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। উপস্থাপনা করেন নবনীতা চৌধুরী।

শুরুতে অনুষ্ঠানের টাইটেল অ্যানিমেশন ভিডিও ‘দ্য এটারনাল মুজিব’ দেখানো হয়। অনুষ্ঠানের এদিনের প্রতিপাদ্য ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’র ওপর একটি অডিও–ভিজ্যুয়ালও দেখানো হয়।

আরও পড়ুন