ইলিশের উন্নয়নে ২৪৬ কোটি টাকার প্রকল্প

ছবি: প্রথম আলো

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দেশে ইলিশ সম্পদের উন্নয়নে ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পসহ এক হাজার ২৬৬ কোটি টাকার মোট পাঁচটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে চলতি অর্থবছরের নবম একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং একনেক সদস্যরাসহ সংশ্লিষ্টরা একনেক ভবন থেকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে এমএ মান্নান বলেন, ‘আজকের একনেক সভায় পাঁচ প্রকল্প উত্থাপন করি এবং পাঁচটিই সম্পূর্ণ নতুন প্রকল্প। এসব প্রকল্পে মোট এক হাজার ২৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয় হবে এবং পুরো অর্থ সরকারের তহবিল থেকে দেওয়া হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মৎস্য অধিদপ্তর ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে ২৪৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও পরিচালনা’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

জাটকা ও মা ইলিশ ধরার ওপর নির্ভরশীল প্রায় ৩০ হাজার জেলে পরিবারের বিকল্প আয়ের উৎসের আওতায় দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে (৯ ইঞ্চিরও কম লম্বা ইলিশ রক্ষা) এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

প্রজননক্ষেত্র রক্ষায় কড়াকড়ির সুফল হিসেবে এখন মৌসুমে বিপুল পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ে।
ছবি: প্রথম আলো

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমে ছয়টি অভয়ারণ্য পরিচালনা এবং প্রায় ৩০ হাজার জেলে পরিবারকে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা, ১০ হাজার জেলেকে বৈধ জাল সরবরাহ করা এবং বিকল্প চাকরিতে ১৮ হাজারকে প্রশিক্ষণ প্রদান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সরকারের ৭৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮টি শিশু পরিবারে ২৫ শয্যার শান্তি নিবাস প্রতিষ্ঠার আরেকটি নতুন প্রকল্প সম্পর্কে মান্নান বলেন, অবহেলিত বৃদ্ধদের থাকার জন্য ৮টি ২৫ শয্যার শান্তি নিবাস (বৃদ্ধাশ্রম বা বার্ধক্যের বাড়ি) নির্মিত হবে।

বৃদ্ধা ও শিশু উভয়ের সহাবস্থানের পথ সুগম করার জন্য গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, লালমনিরহাট সদর, ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর, নোয়াখালীর মাইজদী, রাজশাহীর বায়া, খুলনার মহেশ্বরপাশা ও বরিশালের সাগরদীতে শান্তি নিবাস নির্মিত হবে।

সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সমাজসেবা অধিদপ্তর ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

আরও দুটি নতুন প্রকল্প হলো, ৩৭৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘জামালপুরের দিগপাইত-সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি সড়ককে যথাযথ মান ও প্রস্থে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প; ২৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বিজিবি’র ৭৩টি সংমিশ্রণ / আধুনিক পর্যবেক্ষণ পোস্ট (বিওপি) নির্মাণ; ৭৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮টি সরকারি শিশু পরিবহনের প্রকল্পে ২৫ শয্যার শান্তি নিবাস প্রতিষ্ঠা করা।

একটি সংশোধিত প্রকল্প হলো- ৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা এবং চট্টগ্রামে মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউট’ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় ৩৩৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় এবং সময় উভয়ই বাড়ানো হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের দেওয়া প্রকল্পের তথ্য-প্রমাণ অনুসারে মূল ব্যয় এক হাজার ৩৩১ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা সংশোধিত প্রকল্পে বাড়িয়ে এক হাজার ৬৬৭ কোটি ৮ লাখ টাকা করা হয়েছে।
প্রকল্পের সময় ২০২০ সালের জুনের পরিবর্তে ২০২২ সালের জুন করা হয়েছে।