ইয়েমেনে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত ৫ নাবিক ফিরছেন আগামী সপ্তাহে

ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে প্রায় চার বছর ধরে লড়াই চলছে।
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের হাত থেকে ৯ মাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত বাংলাদেশের পাঁচ নাবিককে আগামী সপ্তাহে ঢাকায় ফিরিয়ে আনছে সরকার।

ওমান ও কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং জিবুতিতে ভারতীয় দূতাবাসের সহায়তায় এই নাবিকদের আজ বৃহস্পতিবার ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে এডেনে আনা হবে। পরে সেখান থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লি হয়ে কয়েক দিনের মধ্যে ঢাকায় আনা হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গতকাল বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে জানান, হুতি বিদ্রোহীদের হাতে জিম্মি হয়ে থাকা ওই পাঁচ নাবিক হলেন মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, মোহাম্মদ ইউসুফ, রহিম উদ্দিন, মোহাম্মদ আলমগীর ও আবু তৈয়ব। তাঁরা সবাই চট্টগ্রামের অধিবাসী ও ওমানের মাছিরা নামের একটি জাহাজ কোম্পানিতে কাজ করতেন। সৌদি আরবে নির্মাণকাজের জন্য যেতে তাঁরা ওমান থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করেছিলেন।

উদ্ধারের পর বাংলাদেশের ওই পাঁচ নাবিককে সানার একটি হোটেলে রাখা হয়েছে। তাঁদের খাবার, বাসস্থান ও ফেরত আনার ব্যবস্থা করার জন্য কুয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসকে নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

কর্মকর্তারা আরও বলেন, যাত্রাপথে সৌদি আরবের ইয়ানবু বন্দরে এই নাবিকেরা লোহিত সাগরে একটি জাহাজডুবির খবর পান। জাহাজটির নাবিকদের উদ্ধারে ২০ জন নাবিক (বিদ্রোহীদের হাতে আটকে পড়া) ইয়েমেনের উপকূলে নোঙর করেন। পরে ইয়েমেনের কোস্টগার্ড সদস্য পরিচয় দিয়ে একদল লোক ২০ নাবিককে রাজধানী সানায় নিয়ে যান। পরে জানান, তাঁরা হুতি বিদ্রোহী।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গতকাল দুপুরে তাঁর ফেসবুক পোস্টে ওই পাঁচ বাংলাদেশি নাবিককে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি লিখেছেন, ‘ইয়েমেনের সানায় দীর্ঘদিন থেকে হুতিদের হাতে আটক হয়েছিলেন ওমানের একটি জাহাজ কোম্পানিতে কাজ করা বাংলাদেশি ৫ জন নাবিক। সাথে ভারতীয় নাগরিকও আটক ছিলেন। ৯ মাস ধরে আটক থাকা অবস্থার একপর্যায়ে জাহাজ কোম্পানির মালিকের কাছ থেকে আংশিক মুক্তিপণ পাবার পরে তাঁদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। আটককৃতদের মধ্যে একজন আমার সাথে প্রথম যোগাযোগ করেন প্রায় দুই মাস আগে। আমাদের ওমান ও কুয়েত দূতাবাস এবং জিবুতিতে ভারতীয় দূতাবাসের দুই মাসের প্রচেষ্টায় আগামীকাল তাঁরা এডেনে আসবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। সেখান থেকে তাঁরা আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার সহায়তায় ভারত হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, উদ্ধারের পর বাংলাদেশের ওই পাঁচ নাবিককে সানার একটি হোটেলে রাখা হয়েছে। তাঁদের খাবার, বাসস্থান ও ফেরত আনার ব্যবস্থা করার জন্য কুয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসকে নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।