ঈশ্বরদীতে রেলে নাশকতা ঠেকাতে কঠোর নিরাপত্তা
পাবনার ঈশ্বরদীর রেলওয়ে জংশনে নাশকতা ঠেকাতে কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে সব ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটারে কমিয়ে আনা হয়। এখানকার ৬৬ কিলোমিটার রেলপথে এবং স্টেশনে নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত টহল দিচ্ছেন।
রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক জানান, পাকশী রেলওয়ে হার্ডিঞ্জ সেতুর পূর্ব পাশ থেকে শুরু করে রাজশাহীর হরিয়ান স্টেশন (আপ-আউটার সিগন্যাল) এবং নাটোরের আবদুলপুর স্টেশন পর্যন্ত রেললাইনের ৬৬ কিলোমিটার এলাকায় ২১৬ জন আনসার সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা প্রতিটি রেলস্টেশন, সেতু ও রেললাইনের দুই পাশে হেঁটে দিনরাত দলবদ্ধভাবে পাহারা দিচ্ছেন। প্রতিটি দলে চার-পাঁচজন করে আনসার সদস্য রাখা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ও নিরাপত্তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সব ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটারের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। এ ছাড়া রাতে ট্রেন ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে রেল ও থানা-পুলিশ যৌথভাবে অগ্রগামী নিরাপত্তা দল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। তারা স্টেশন থেকে পরবর্তী স্টেশন পর্যন্ত পাহারা দিয়ে ট্রেন নিয়ে যাচ্ছে। আনসারের পাশাপাশি রেলওয়ে পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং প্রয়োজনে র্যাবও থাকছে।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে পুলিশ জানায়, ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার আওতায় কয়েক দিনের চলমান রাজনৈতিক সহিসংতা, হরতাল-অবরোধের সময় রেলওয়েতে তিনটি বড় ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ১৮-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা জড়িত বলে পুলিশের দাবি।
থানা সূত্র জানায়, ১ ডিসেম্বর গভীর রাতে ঈশ্বরদী-রাজশাহী লাইনের চারঘাটের জোকার বিলের কাছে ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে ফেলেন। এতে আন্তনগর ধূমকেতু এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর আগে গত ২৬ নভেম্বর দিনে রাজশাহীর সরদহ রেলস্টেশনে উত্তরা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনে পেট্রল ঢেলে এবং ওই রাতে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন ইয়ার্ডের ‘ওয়াশফিটে’ সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানায় তিনটি মামলা করা হয়। মামলায় ১৮-দলীয় জোটের ৭২ জন নেতা-কর্মী ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় রাজশাহীর সরদহ রোড এলাকা থেকে শিবিরের কর্মী রানা ও আজগরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঈশ্বরদীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক আলিয়া ভুলুকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ঈশ্বরদীতে ট্রেনে আগুন লাগানোর মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। কিছু নাম পাওয়া গেছে। জড়িত ব্যক্তিরা সবাই ১৮ দলের নেতা-কর্মী।