উদ্বোধনের ছয় মাস পরও চালু হয়নি

সংস্কারের পর রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তন l প্রথম আলো
সংস্কারের পর রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তন l প্রথম আলো

রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তন পাঁচ বছর ধরে সংস্কার করা হচ্ছে। নাম বদলে শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান অডিটোরিয়াম করা হয়েছে। নতুন নামফলক লাগিয়ে ছয় মাস আগে এর উদ্বোধন করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। কিন্তু এখনো মিলনায়তনটি চালু করা সম্ভব হয়নি। কবে নাগাদ হবে তা-ও কেউ বলতে পারছেন না।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, জেলা পরিষদ মিলনায়তনটি সংস্কারের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০১১ সালের ৪ নভেম্বর। কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০১২ সালের ১০ জুন। অথচ এখনো সেই সংস্কার শেষ হয়নি। লাগানো হয়নি ভেতরের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ও সাউন্ড সিস্টেম। এ অবস্থার মধ্যেই গত ৯ ফেব্রুয়ারি সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন এর উদ্বোধন করেন। এ সময় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, রাজশাহী জেলা পরিষদের সচিব শেখ মজিবর রহমান ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা জেবিন নিছা সুলতানাও উপস্থিত ছিলেন।
মিলনায়তনের বাইরের চেহারা পাল্টে আধুনিকায়ন করা, ভেতরের সৌন্দর্যবর্ধন, নতুন সাউন্ড সিস্টেম স্থাপন, গ্যালারি পরিবর্তন, ওপরে ফলস সিলিং লাগানো, ছাদে জিঙ্ক অ্যালুমিনিয়ামের শিট লাগানো ও বিদ্যুতের জন্য নিজস্ব সাব-স্টেশন বসাতে নগরের পদ্মা আবাসিক এলাকার ‘বেল অ্যান্ড এ কে জেভি’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০১১ সালের ৪ নভেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজ শেষ করার মেয়াদ ছিল ২০১২ সালের ১০ জুন। কিন্তু সেসব কাজ এখনো শেষ হয়নি।
নগরের মনিবাজারে অবস্থিত এ সরকারি মিলনায়তনের ধারণক্ষমতা সাড়ে আট শ দর্শকের। এটি এক দিনের জন্য তিন হাজার টাকা ভাড়া দেওয়া হতো। এ রকম সুবিধার ও মানসম্মত মিলনায়তন রাজশাহীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। এটি দ্রুত জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়ার দাবি নিয়ে রাজশাহী আবৃত্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহাম্মেদসহ কয়েকজন সংস্কৃতিকর্মী সম্প্রতি জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মজিবর রহমানের সঙ্গে দেখাও করেন।
শরীফ আহাম্মেদ বলেন, রাজশাহীতে অল্প টাকায় ভাড়া নিয়ে সংস্কৃতিকর্মীরা এ মিলনায়তন ব্যবহার করতেন। অথচ পাঁচ বছরেও মিলনায়তনটির সংস্কারকাজ শেষ হয়নি। কাজের এই দীর্ঘসূত্রতা রাজশাহীর সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রে একটি বাধা। কারণ, রাজশাহীতে শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তন রয়েছে। কিন্তু সেখানে ভাড়া বেশি। তা ছাড়া নাটক ও আবৃত্তির জন্যও উপযোগী নয়। তিনি দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ করে মিলনায়তনটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, ভেতরের নতুন আসনব্যবস্থার জন্য ঠিকাদারের ৫৫ লাখ টাকা বিল এখনো দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ইতিমধ্যে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ও সাউন্ড সিস্টেমের কাজের জন্য এক কোটি টাকার দরপত্র হয়েছে। তবে টাকা না পাওয়ায় ঠিকাদার কাজে হাত দিচ্ছেন না। কারণ, আগের কাজে ৫৫ লাখ টাকাই এখনো দেওয়া হয়নি। এই এক কোটি টাকা কবে পাওয়া যাবে, তা-ও বলা যাচ্ছে না।