উদ্বোধনের দিন পদ্মার দুই পারে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকবে
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন সেতুর দুই প্রান্তে সাধারণ যানবাহন চলাচলে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অতিথিদের নিরাপত্তা, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করা এবং যানজট এড়াতে এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুরসহ আশপাশের জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীসহ দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা একাধিক বৈঠকও করেছেন। সেতু বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সেতু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ২৫ জুন ভোর ছয়টা থেকে ঢাকা এবং পদ্মার ওপারে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত—চার লেনের মহাসড়কের এই ৫৫ কিলোমিটার অংশে সাধারণ যানবাহন চলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরদিন থেকে টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পারাপার করা যাবে।
উদ্বোধনের দিন উৎসুক মানুষ ঢাকা থেকে সেতু এলাকায় যেতে হলে বিকল্প পথ ধরতে হবে। এ ক্ষেত্রে পোস্তগোলা সেতুর পাশ দিয়ে মুক্তারপুর সেতু হয়ে মুন্সিগঞ্জের ভেতর দিয়ে মাওয়া ফেরিঘাট বা এর আশপাশের এলাকায় যাওয়া যাবে। একইভাবে পদ্মার ওপারেও বিকল্প পথ ব্যবহার করা যাবে। পদ্মার দুই পারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে মাদারীপুরের শিবচরে জনসভায় অংশ নেবেন।
সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং সুধী সমাবেশে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষের বসার ব৵বস্থা থাকবে। এঁদের সবাইকে কার্ড দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ফলে কার্ডধারীদের বাইরে কেউ ওই দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে প্রবেশ করতে পারবে না। গণ্যমান্য ব্যক্তিদের গাড়ির জন্য বিশেষ পাস দেওয়া হবে। গণমাধ্যমকর্মী ও সেতু বিভাগের কর্মীসহ অন্যদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানস্থলে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়কটি এমনিতেই প্রবেশনিয়ন্ত্রিত। ফলে কর্তৃপক্ষ যে কটি যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেবে, এর বাইরের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা খুব বেশি কঠিন হবে না।
সেতু বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে নাশকতার চেষ্টা আছে—এমন আশঙ্কার কথা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত বলেছেন।
এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় সাধারণ যানবাহন প্রবেশের সুযোগ দিলে মানুষের ভিড় বাড়বে। এতে যানজট ও দুর্ঘটনারও আশঙ্কা আছে। এ জন্যই সাধারণ যানবাহন চলাচলে কড়াকড়ির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় সেতু বিভাগ নিজেও একটি উপকমিটি করেছে। তারা অতিথিদের জন্য যানবাহনের প্রয়োজন হলে তা সরবরাহ করবে।