উপাচার্যদের আমলনামা-শেষ পর্ব

নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পদত্যাগ করা উপাচার্য

নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গত মার্চে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রফিকুল হক। ২০১১ সালের আগস্টে উপাচার্য হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ পান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের এই কৃষি প্রকৌশলী।

রফিকুল হক
রফিকুল হক


গত ১৪ মার্চ রফিকুল হকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। ১৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুলতানা রাজিয়া হলের তৃতীয় শ্রেণির এক নারী কর্মচারীর সঙ্গে উপাচার্যের গোপন কথোপকথনের কয়েকটি অডিও ফাঁস নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। ওই কর্মচারীকে তিনিই নিয়োগ দিয়েছিলেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ মার্চ আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম’ জরুরি সভা ডাকে। সভা শেষে তারা উপাচার্যকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য সময় বেঁধে দেন। কিন্তু উপাচার্য তা ‘অসত্য’ প্রমাণ করেননি। এর সঙ্গে যুক্ত হয় তাঁর সময়ে ৩০৭ কর্মচারী নিয়োগ অনিয়মের বিষয়টি।

১৯ মার্চ উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা। এরপর ২৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১টি প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা। মাসব্যাপী আন্দোলন ও সংকটের মুখে পদত্যাগ করেন ২২তম উপাচার্য রফিকুল হক। পদত্যাগের পরদিন ওই অধ্যাপক শিক্ষকতা থেকেও অবসর নেন। এই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদিও নারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ছাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক উপাচার্য প্রশাসনিক দায়িত্ব ও শিক্ষকতা থেকে নিজেই সরে গেছেন। কর্তৃপক্ষ আর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

রফিকুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৩০০ কর্মচারী নিয়োগ দেন, যাঁদের মধ্যে পদ ছাড়াই শর্ত সাপেক্ষে নিয়োগ পান অর্ধশতাধিক কর্মচারী। এ নিয়ে আদালতে মামলা হলেও নিয়োগপ্রাপ্তদের পক্ষেই রায় গেছে।