ঋণচুক্তির প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে বিশেষ গুরুত্ব

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দ্বিপক্ষীয় সফর, মুখোমুখি বৈঠক—সবকিছুই মার্চ থেকে স্থগিত হয়ে আছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নেতৃত্বে যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকটি এবার প্রথমবারের মতো ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় বৈঠকে ভারতীয় ঋণচুক্তির (এলওসি) প্রকল্পগুলো দ্রুততর করা, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো এবং জ্বালানি, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে দুই দেশের বিশেষ মনোযোগ থাকবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, জেসিসির ষষ্ঠ বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর যৌথভাবে উদযাপনের বিষয়ে আলোচনা হবে।

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে কিছুটা কমলেও হঠাৎ করে সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বেড়েছে। জেসিসির আলোচনায় বিষয়টি বাংলাদেশ তুলবে। দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) শেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০ সালের মার্চে। তিস্তা চুক্তি যেমন এক দশক ধরে ঝুলে আছে, সেই সঙ্গে জেআরসির বৈঠকটি ১০ বছর ধরে হয়নি। এমন এক পরিস্থিতিতে জেআরসির বৈঠক আবার আয়োজনের বিষয়টিও বাংলাদেশ তুলতে পরে।

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা, বাণিজ্য, উন্নয়ন সহযোগিতা, পানিসম্পদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে সহযোগিতা, মানুষে মানুষে যোগাযোগ—এসব বিষয়ে আলোচনা হবে। এ বিষয়গুলোর পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে আকাশপথে সরাসরি যাত্রী পরিবহনের জন্য ‘এয়ার বাবল’ কার্যকরের বিষয়টি চূড়ান্ত করার ব্যাপারে আলোচনা হবে।

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পাবে ভারতের দেওয়া ঋণচুক্তি বা এলওসির প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনা। দুই দেশের মধ্যে এরই মধ্যে তিনবার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ পর্যন্ত চুক্তির কম অর্থই ছাড় করা হয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারত জেসিসি বৈঠক সম্পর্কে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ভারতের ভূখণ্ড হয়ে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের ট্রানজিটের বিষয়টি চাইলেই ভারত সুরাহা করে দিতে পারে। এটা হলে জনমনে এই আবহ তৈরি হবে যে ইতিবাচক কিছু ঘটছে। কারণ, বাংলাদেশ এরই মধ্যে ট্রানজিট নিয়ে ভারতের সব চাহিদা পূরণ করতে রাজি হয়েছে।