ঋণের টাকা তুলতে যাওয়া ৪ এনজিওকর্মীকে মারধরের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় ঋণের টাকা আদায় করতে গিয়ে ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) নামের একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) চার কর্মী মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চর নেয়ামত সুপিরহাট এলাকায় সেলিম চৌধুরী নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, এ ঘটনায় ওই চার কর্মী আহত হয়েছেন। উপজেলা সদরের একটি ক্লিনিকে তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় রামগতি থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে সেলিম চৌধুরীর ছেলে মো. শাহাজাদার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আহত এনজিওকর্মীরা হলেন ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের (টিএমএসএস) চর আলেকজান্ডার শাখার ব্যবস্থাপক মো. ওমর ফারুক, হিসাবরক্ষক মো. মোস্তাক আহমদ, মাঠকর্মী মো. মোজাফ্ফর হোসেন ও মো. আশিকুর রহমান।

মো. ওমর ফারুক জানান, সেলিম চৌধুরীর স্ত্রী সেলিনা আক্তার সাত মাস আগে তাঁর কার্যালয় থেকে ৯৫ হাজার টাকা ঋণ নেন। প্রতি মাসে ৯ হাজার ২৫ টাকা করে ১২ কিস্তিতে ওই ঋণ পরিশোধ করার কথা। কিন্তু ঋণ গ্রহণের পর থেকে সেলিনা আক্তার অনিয়মিতভাবে টাকা পরিশোধ করছিলেন। তিনি ৩ কিস্তিতে প্রায় ২৭ হাজার টাকা বকেয়া (খেলাপি) করেন। বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তিনি ওই টাকা পরিশোধ করছিলেন না। চলতি মাসের (আগস্ট) হিসাব হালনাগাদ করার জন্য (ক্লোজিং উপলক্ষে) গতকাল বিকেলে বকেয়া টাকা আদায় করতে হিসাবরক্ষক ও দুই কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সেলিনা আক্তারের বাড়িতে যান। ওই সময় তাঁদের অপেক্ষা করতে বলে সেলিনা আক্তার মুঠোফোনে তাঁর ছেলে শাহাজাদা ও স্বামী সেলিম চৌধুরীকে বাড়িতে আসতে বলেন।
সন্ধ্যার দিকে শাহাজাদা বাড়িতে এসে তাঁদের দেখতে পেয়ে ক্ষিপ্ত হন এবং কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাতাড়ি মারধর করে বাড়ি থেকে তাঁদের বের করে দেন। এ ঘটনায় তিনিসহ তাঁর কর্মীরা আহত হন। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনাটি তাঁরা এলাকার লোকজনকে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় শাহাজাদার বিরুদ্ধে রাতেই থানায় তাঁরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে শাহাজাদা বলেন, পারিবারিক সমস্যার কারণে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছিল। দুই দিন আগে কিছু টাকা পরিশোধ করে অবশিষ্ট টাকা শিগগিরই পরিশোধ করার আশ্বাস দেওয়া হয়। এর পরও গতকাল সন্ধ্যায় টাকার জন্য এনজিওকর্মীরা বাড়িতে গিয়ে তাঁর মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করছিলেন। টাকা না পেয়ে একপর্যায়ে তাঁর মায়ের অলংকার নেওয়ার জন্য চাপাচাপি করছিলেন। এতে বাধা দিলে তাঁরা ক্ষিপ্ত হন। ওই সময় তাঁদের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। সেখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আরিচুল হক বলেন, মারধরের ঘটনায় ওমর ফারুকের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্ত করে এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।