নানা চেষ্টার পর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সাড়ে তিন বছর পরও রোহিঙ্গাদের একজনকেও মিয়ানমারের রাখাইনে ফেরত পাঠানো যায়নি। তারপরও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এ বছর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চান। আজ রোববার তিনি তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের এ আশাবাদের কথা জানান।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা এ বছর প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাই। নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে ১ জানুয়ারি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মন্ত্রী টিন্ট সোয়েকে চিঠি লিখেছি। চিঠিতে তাঁকে লিখেছি, এ বছর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হোক।’
মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকারের বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে টিন্ট সোয়েকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আপনারা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দিয়ে ফিরিয়ে নেবেন বলেছেন। প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরির কথা দিয়েছেন। কিন্তু কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ জন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
কাজেই নববর্ষে আমাদের প্রত্যাশা, আপনারা কথা রাখেন। অতীতে কথা রেখেছেন। নিজেদের লোকগুলো নিয়ে যান। কাজে লাগবে। আর তাদের ফিরিয়ে না নিলে অশান্তির আশঙ্কা আছে।’
এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, চীনের পাশাপাশি জাপানের কাছ থেকেও বাংলাদেশ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সহযোগিতা চায়।
মন্ত্রী বলেন, ‘জাপানের অনেক বড় আকারের বিনিয়োগ আছে মিয়ানমারে। তাই তাদের আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করতে অনুরোধ জানিয়েছি। জাপান আমাদের মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, চীন ও জাপানের মতো ভারতও মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করবে।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর নিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ভাসানচর নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা আছে। মিথ্যা প্রচারণা হচ্ছে, এটি ভেসে যাবে। কিন্তু ১৯৯০ সাল থেকে আমরা দেখভাল করছি। সর্বশেষ আম্পানেও ভাসানচরের কোনো ক্ষতি হয়নি।’
আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও মিডিয়াকে নিয়ে (ভাসানচরে) যাব। জাতিসংঘকে আগেও নিয়েছি এবং আরও দল যাবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে ভূমিধস হতে পারে। অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে। পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া সামাজিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। যেমন স্থানীয় ব্যক্তিদের মজুরি কমে গেছে, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে।