এই দিনে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলায় পা ফেলেছিলেন

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

বাঙালির আরেকটি আবেগের দিন আজ। স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলায় পা রাখেন স্বাধীনতার স্থপতি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে বাঙালি জাতি দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে লাল-সবুজের পতাকা লাভ করে। আজকের দিনটিতে সেই প্রিয় নেতাকে কাছে পায় দেশের মানুষ।

বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন ঘিরে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে উদ্‌যাপিত হচ্ছে ‘মুজিব শতবর্ষ’-এর নানা আয়োজন। এরই মধ্যে বাংলাদেশ উদ্‌যাপন করেছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এই পিঠাপিঠি উদ্‌যাপনের রেশ ধরে জাতি আজ আবার যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এই দিনটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ছোট জমায়েত এবং স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ‘মুক্ত স্বদেশে জাতির পিতা’ প্রতিপাদ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আজ বেলা তিনটায় অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনের শহীদ মনিরুল আলম মিলনায়তন থেকে সব টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত থেকে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। অনুষ্ঠানে বাবা ও মাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার লেখা কবিতা আবৃত্তি করা হবে। আলোচনা পর্বে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস সম্বন্ধে আলোচনা করবেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আয়োজন করা হয়েছে ঢাকা ম্যারাথন। ভোর সাড়ে পাঁচটায় দেশি-বিদেশি ৬০০ প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে থেকে শুরু হবে ম্যারাথন দৌড়। সেটি শেষ হবে হাতিরঝিলে এসে।

দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ বিজয়ের পূর্ণতা লাভ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি ত্রিশ লাখ শহীদ ও দু’লাখ নির্যাতিত মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখব। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতির পিতার স্বপ্নের “সোনার বাংলাদেশ” বিনির্মাণে কার্যকরী ভূমিকা রাখব।’

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে। রাজধানী ঢাকা, বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া এবং সারা দেশে এসব কর্মসূচি পালিত হবে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারা দেশে দলের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাড়ে আটটায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে বেলা ১১টায়। এর জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল গঠন করা হয়েছে। এই দলে থাকবেন ফারুক খান, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী, ওয়াসিকা আয়েশা খান, বিপ্লব বড়ুয়া, মো. সিদ্দিকুর রহমান, এ বি এম রিয়াজুল কবির, রেমন্ড আরেং, মোহাম্মদ সাইদ খোকন।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সীমিত পরিসরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ ছাড়া ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদ্‌যাপনের জন্য প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে।