একই দিনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারত ও পাকিস্তানের হাইকমিশনার

ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী ও পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী

ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী ও পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান। দক্ষিণ এশিয়ার বৈরী দুই দেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের একই দিনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যায়নি। ভারতের হাইকমিশনার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আর পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন পাকিস্তানের হাইকমিশনার।

দুপুরে কাছাকাছি সময়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ দুটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী। এর মিনিট ১৫ পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে দেখা করতে যান ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। তবে পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের আলোচনা শেষ হওয়ার আগেই বিক্রম দোরাইস্বামী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছেড়ে যান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিকেলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর সৌজন্য সাক্ষাতের কথা ছিল। কয়েক দিন ধরে সময়সূচিতে না মেলায় আলোচনাটি হতে পারেনি। দুপুরে ‘অনানুষ্ঠানিক’ সাক্ষাৎটি হয়েছে। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় ভারতের শীর্ষ কূটনীতিক কী আলোচনা করেছেন, তা নিয়ে কেউ কথা বলতে চাননি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় সার্ক তহবিলের আওতায় বাংলাদেশের একটি বেসরকারি সাহায্য সংস্থাকে পাকিস্তানের সহায়তার বিষয়টি পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আলোচনায় তোলেন ইমরান সিদ্দিকী। সার্কের কোভিড–১৯ জরুরি তহবিল থেকে বাংলাদেশের ওই সংস্থাটিকে চিকিৎসা সরঞ্জামসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী দেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে গত ডিসেম্বরে ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দিয়েছিল। ওই প্রস্তাব ছয় মাস ধরে ঝুলে থাকায় তা সুরাহার জন্য পাকিস্তানের হাইকমিশনার পররাষ্ট্রসচিবকে অনুরোধ জানান। বাংলাদেশ বিষয়টি সুরাহার আশ্বাস দিয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে ২০২০ সালে সার্কের কোভিড–১৯ জরুরি সহায়তা তহবিল গঠন করা হয়েছে। ভারত ওই তহবিলের জন্য এক কোটি ডলার বরাদ্দ রেখেছে। পাকিস্তান ৩০ লাখ ডলার এবং বাংলাদেশ ১৫ লাখ ডলার বরাদ্দ রেখেছে। মূলত কোভিডের জন্য বিশেষ তহবিলের টাকা সার্কের সদস্য দেশগুলো নিজেদের কাছে রেখেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ওই তহবিল থেকে অন্য দেশে সহায়তা দিচ্ছে।

এদিকে বারিধারায় পাকিস্তান হাইকমিশনের জন্য বরাদ্দ হওয়া প্লটের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জটিলতা ছিল। এ সপ্তাহে সরকারের সংশ্লিষ্ট একটি বিভাগ তা সুরাহার উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য পাকিস্তানের হাইকমিশনার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।