এতগুলো জীবন গেলে তার মূল্য কে দেবে: জাফরুল্লাহ

আগুনে পোড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের হাসেম ফুডসের কারখানা পরিদর্শন করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ অন্যরা।ছবি: সংগৃহীত।

হাসেম ফুডসের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ বলেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, নিয়মনীতির মধ্যে না এলে এ ধরনের ঘটনা থামবে না।

নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভুলতায় সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুন লাগে। এ সময় ছয়তলা ওই কারখানা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। প্রায় ১৯ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ভবনের চতুর্থ তলার একটি কক্ষ থেকে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আজ রোববার সমমনা কয়েকজন রাজনীতিক ও অধিকারকর্মীকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এভাবে প্রাণহানির জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর অগ্নিকাণ্ডে যেভাবে মৃত্যু ঘটছে, তাতে এই সরকারের ক্ষমা পাওয়ার উপযুক্ততা নাই। ন্যায়নীতি না থাকলে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইন না মানলে এই সব দুর্ঘটনা থামবে না। আমাদের সবার জন্য দুঃখ আছে, জাতির জন্য দুর্ভোগ আছে। এতগুলো জীবন গেলে তার মূল্য কে দেবে? এই দায়দায়িত্ব সরকারের।’

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘এটাকে দুর্ঘটনা বলা যাবে না, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সরকারের কলকারখানা পরিদর্শন বিভাগ আছে। তাদের নিয়মিত কলকারখানায় এসে দেখার কথা। দুর্নীতির কারণে তারা আসে না।’

পরিদর্শক কমিটিতে দুজন নিরেপক্ষ পরিদর্শক রাখার দাবি জানিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের হাতে জীবন ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর জাতীয় সক্ষমতা তৈরি হওয়ার কথা ছিল। সরকার কোনো প্রতিষ্ঠান তৈরি করল না। গার্মেন্টের বাইরে এ দেশে যত কলকারখানা আছে সব একই রকম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

কলকারখানা পরিদর্শন কমিটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, পরিদর্শনে এসে ‘টাকার বিনিময়ে’ ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এসব দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, রাষ্ট্রচিন্তার হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মো. ফরিদ উদ্দিন।