এসএমসি নীলতারা ক্লিনিক

ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন এক ব্যক্তি
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে জনসংখ্যার অধিকাংশই, বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষ মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এবং উন্নতমানের ডায়াগনস্টিক পরিষেবার ব্যয় বহন করতে অক্ষম। বাস্তব চিত্র নারী, শিশু ও পারিবারিক স্বাস্থ্য এবং সামগ্রিক কল্যাণ বিবেচনা করে এসএমসি ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানে চালু শুরু করে ‘এসএমসি নীলতারা ক্লিনিক’ নামে একটি মডেল ক্লিনিক। ক্লিনিকটির প্রধান উদ্দেশ্য হলো সব স্তরের জনগণকে সুলভ মূল্যে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা। যার মধ্যে রয়েছে আধুনিক ডায়াগনস্টিক সুবিধাসহ (এক্স-রে, ইউএসজি, ইসিজি ইত্যাদি) গাইনি, মেডিসিন, পেডিয়াট্রিক, অর্থোপেডিক, স্কিন ও ভিডি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ, প্রেসক্রিপশন প্রদান এবং ক্লায়েন্ট ডেটাবেইজ সংরক্ষণ। ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ফার্মেসি থেকে অর্জিত অর্থ ক্লিনিক পরিচালনা এবং দরিদ্র জনগণের চিকিৎসায় ভর্তুকি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ক্লিনিকটিতে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সেবা প্রদান করা হয়। ক্লিনিক প্রাঙ্গণে একটি মডেল ফার্মেসি রয়েছে, যা ন্যায্যমূল্যে মানসম্পন্ন ওষুধ সরবরাহ করে। সাধারণ জনগোষ্ঠীকে আরও উন্নত সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে বর্ধিত সময়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসেবা (এন্ডোক্রাইনোলজি/অর্থোপেডিক), ল্যাব-সুবিধা (মাইক্রোবায়োলজি, হিস্টোপ্যাথলজি, এইচবি ইলেকট্রোফোরেসিস, ক্যানসার নির্ণয় পরীক্ষা), করপোরেট হেলথ চেকআপ এবং হেলথ প্যাকেজ সংযোজনের মাধ্যমে বর্তমান পরিষেবাগুলো আরও প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সামাজিক প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে এসএমসির এই স্বাস্থ্যসেবা অক্ষুণ্ন রাখতে ক্লিনিকের সদস্যরা উদ্যমী ও নির্ভীক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে সমাজের সব স্তরের মানুষের মধ্যে অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে। করোনা মহামারি চলাকালে নানাবিধ প্রতিকূলতার পরও ক্লিনিকটি ডিজিএইচএস, বাংলাদেশ সরকার এবং ডব্লিউএইচও প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি-সম্পর্কিত সব নির্দেশিকা কঠোরভাবে অনুসরণ করে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রেখেছে। এ ছাড়া প্রতিটি স্তরে সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলায় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করে ক্লিনিকটি গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছে। জেনারেল ফিজিশিয়ান ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত ক্লিনিকটি মোট ৭০ হাজার ১৩২ জন রোগীকে সেবা দিয়েছে, যাদের মধ্যে ৯১ শতাংশ নারী, ৯ শতাংশ পুরুষ ও ১৭ শতাংশ শিশু।

ইতিবাচক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ২০২১ সালের জুলাইয়ে এসএমসি দারুস সালাম, মিরপুরে ‘এসএমসি ক্লিনিক’-এর কার্যক্রম শুরু করে। সামাজিক পর্যায়ে শিশুর যত্ন এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ করে ওই ক্লিনিকে ইতিমধ্যে একটি মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ক্লিনিক পরিষেবা সম্প্রসারণ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২৬ সালের মধ্যে খুলনায় একটি এবং ২০২৭ সালের মধ্যে সিলেটে একটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এসএমসি। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ক্লিনিকগুলো পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে।