ওজন ৩৬ মণ, দাম হাঁকছেন ৫০ লাখ

খামারি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরীর খামারে বঙ্গ ফ্রিজিয়ান জাতের ৩৬ মণ ওজনের ষাঁড়। ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো
খামারি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরীর খামারে বঙ্গ ফ্রিজিয়ান জাতের ৩৬ মণ ওজনের ষাঁড়। ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

১০ ফুট দৈর্ঘ্য, উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। ওজন ১ হাজার ৪৫০ কেজি বা ৩৬ মণ। বঙ্গ ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টির দাম হাঁকা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা।

ষাঁড়ের মালিক ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া গ্রামের খামারি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী। তিনি কোরবানির ঈদে ষাঁড়টি বিক্রি করবেন। গরুটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমছে তাঁর বাড়িতে।

২০১২ সালে ৩৫ হাজার টাকায় একটি গাভি কিনে পালন শুরু করেন রিয়াজ উদ্দিন। বঙ্গ ফ্রিজিয়ান জাতের একটি ষাঁড়ের সিমেন ব্যবহার করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ২০১৬ সালে এই ষাঁড়ের জন্ম দেয় গাভিটি। জন্মের পর বাছুরটিকে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। প্রয়োজনমতো খাবার ও পরিচর্যায় গরুর আকৃতি বাড়তে থাকে। দিনে দিনে গরুটির ওজন বেড়ে ১ হাজার ৪৫০ কেজিতে এসে দাঁড়ায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের ডিজিটাল স্কেলের মাধ্যমে গরুটির ওজন নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ বছর গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রিয়াজ চৌধুরী বলেন, ষাঁড়টির খাদ্যতালিকায় রয়েছে কাঁচা ঘাস, খড়, গমের ভুসি, চালের কুঁড়া, ভুট্টা, ডালের গুঁড়া, তৈলবীজের খৈল, ছোলা ও খুদের ভাত। সবমিলে দিনে গড়ে প্রায় ৫০-৬০ কেজি খাবার খায় গরুটি। শুরুর দিকে খাবার কম খেলেও দিনে দিনে তার খাবারের চাহিদার পরিমাণ বেড়ে যায়। বর্তমানে তাঁর খামারে ২৯টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ব্রাহামা জাতের একটি ষাঁড় রয়েছে। এটির ওজন প্রায় ১০ মণ। আগামী বছর কোরবানির ঈদের বিক্রি করার জন্য গরুটি প্রস্তুত করছেন।

রিয়াজ চৌধুরী বলেন, এ ধরনের গরু লালন–পালন খুবই কষ্টকর। পরিবারের একজন সদস্যের মতো করে তিনি গরুটি পালন করেছেন। পরিবারের সবাই মিলে যত্ন নিয়ে বড় করেছেন। অনেক শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। ৫০ লাখ টাকায় গরুটি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গরুটি তিনি কোনো হাটে না নিয়ে বাড়িতে খামারে রেখে অনলাইনে ছবি ও বিবরণ দিয়ে বিক্রি করার চেষ্টা করছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্রেতারা গরুটির দাম বলছেন অনেক কম।

তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গরুটি বিক্রির জন্য চট্টগ্রামের সাগরিকা বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিক্রি না হলে আগামী বছরের জন্য রেখে দেবেন বলে জানান রিয়াজ চৌধুরী।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, খামারি রিয়াজ চৌধুরী কোরবানির পশুর হাটে বিক্রি করার জন্য সাড়ে চার বছর শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে তাঁর খামারে বঙ্গ ফ্রিজিয়ান জাতের ৩৬ মণ ওজনের একটি ষাঁড় লালন–পালন করেছেন। তাঁর জানামতে, ফেনী জেলার কোথাও এত বড় ষাঁড় নেই। তিনি সব সময় ষাঁড়টির পরিচর্যা ও খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। তবে বেশ বড় আকারের ষাঁড় হওয়ায় বিক্রি নিয়ে তাঁরা চিন্তিত।

আমিনুল ইসলাম জানান, গত বছর উপজেলায় খামারের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪০৫টি। এসব খামারে কোরবানির জন্য সাড়ে ১৯ হাজার পশু পালন করা হয়। এ বছর খামারির সংখ্যা বাড়লেও পশুর সংখ্যা কমেছে। এবার ১ হাজার ৬০৫টি খামারে ১৯ হাজার পশু কোরবানি উপলক্ষে পালন করা হয়েছে।