ওসি প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত

দুদ‌কের মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনা‌নি‌তে বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ‌কে চট্টগ্রাম আদাল‌তে হা‌জির করা হয়
ছ‌বি: সৌরভ দাশ

কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও তাঁর স্ত্রী চুমকি কারনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে চুমকির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৬ জুলাই প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। পরে এটি গ্রহণের শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করা হয়।

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য আদালতকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়। শুনানি শেষে আদালত তা গ্রহণ করেন।

মাহমুদুল হক আরও বলেন, শুনানিতে প্রদীপকে নির্দোষ দাবি করে তাঁর আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিরোধিতা করা হলে আদালত তা নাকচ করে দেন। পাশাপাশি পলাতক থাকায় প্রদীপের স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরের বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি কার, একটি মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে চুমকির নামে। তাঁর ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও এ ব্যবসায়ের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অভিযোগপত্রে সাক্ষী রাখা হয়েছে ২৯ জনকে।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফের উপজেলার বাহারছড়া তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় মামলা করেন তাঁর বোন। ওই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন প্রদীপ। ২৩ আগস্ট প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। পরে চলতি বছরের ২৭ জুন প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। কক্সবাজার আদালতে ওই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।