ভেজাল প্যারাসিটামল সেবনের অভিযোগে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় রায়ে ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং তাঁদের কেন অপসারণ করা হবে না, তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে বলেছেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে অগ্রগতি জানিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্যসচিব ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এই দুই কর্মকর্তা হলেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও উপপরিচালক আলতাফ হোসেন।
বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। ৬ এপ্রিল বিষয়টি পরবর্তী আদেশের জন্য তালিকায় আসবে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ওই দুই ব্যক্তির অদক্ষতা প্রমাণিত হওয়ার পরও তাঁরা বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এটি জনস্বার্থের বিরোধী।
২০০৯ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ সেবন করে সারা দেশে ২৮টি শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিকুল ইসলাম ঢাকার ড্রাগ আদালতে ওষুধ কোম্পানিটির মালিকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর আদালত রিড ফার্মাসিউটিক্যালসের মালিকসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে বেকসুর খালাস দেন। পাশাপাশি রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রেরণ এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেওয়া হয়নি। এ ক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩ ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।
এই রায়ের মাধ্যমে খালাস পাওয়া পাঁচজনের পর্যাপ্ত সাজা চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ গত জানুয়ারিতে আপিল করে। ৯ মার্চ হাইকোর্ট রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। পাশাপাশি আদেশের অনুলিপি পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে এই পাঁচজনকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন।