করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ, বাড়ছে হাসপাতাল ও শয্যা

সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাদের একাংশ। মঙ্গলবার সকালে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
ছবি: প্রথম আলো

বরিশাল বিভাগে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু ক্রমেই বাড়ছে। কমে আসছে হাসপাতালের ফাঁকা শয্যার সংখ্যা। সার্বিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কীভাবে সামর্থ্য আরও বাড়ানো যায়, তা নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছে। মঙ্গলবার সকালের এই বৈঠকে বরিশাল জেলা প্রশাসনের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, সভায় বরিশাল নগরে নারী করোনা রোগীদের জন্য ২০ শয্যার একটি সংরক্ষিত ইউনিট এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ১৮০টি নতুন শয্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পরিস্থিতি অনুযায়ী বরিশাল নগরে একটি বেসরকারি হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল করতে প্রস্তুতি রাখারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই সভা হয়। জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার সভাপতিত্ব করেন। সভায় বর্তমান করোনা পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসন কীভাবে সমন্বয় করে পরিস্থিতির ভয়াবহতা প্রতিরোধ করতে পারে, সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। একই সঙ্গে হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা বাড়ানো, প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নিশ্চিত করাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা গত এক মাসের বেশি সময় ধরে বিভাগের সব জেলায় করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, বিভাগের করোনা রোগীদের সব চাপ এসে পড়ছে দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩০০ শয্যার করোনা ইউনিটে। এখন এই হাসপাতালে রোগীদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন মেঝেতে অনেক রোগীকে জায়গা দিতে হচ্ছে। চিকিৎসক সংকট থাকায় সেবা দিতে হিমশিম অবস্থা চলছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন হাসপাতাল ও শয্যাসংখ্যা না বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বলেও মত দেন তাঁরা।

সভায় নগরের কালীবাড়ি সড়কের মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে নারী করোনা রোগীদের জন্য সংরক্ষিত একটি ইউনিট করার সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে ২০ শয্যার নারী করোনা ইউনিট খোলা হবে। বরিশালের ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ৫-১০টি করে শয্যা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সংরক্ষিত রাখা আছে। এই শয্যাসংখ্যা বাড়িয়ে ২০টি করে মোট ১৮০টি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। পাশাপাশি বেসরকারি একটি হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস, বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক আবদুস সালাম, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান, হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম, উপপরিচালক জসিম উদ্দিন, জেলা সিভিল সার্জন মনোয়ার হোসেন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক তৈয়বুর রহমান, বেসরকারি সাউথ অ্যাপোলো মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জহিরুল হক, আরিফ মেমোরিয়াল হাসপাতালের পরিচালক নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) গৌতম বাড়ৈ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল ইসলাম খান প্রমুখ।