করোনা রোগী বাড়ছেই

প্রতিদিনই যশোর জেনারেল হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত তিন দিনে নতুন করে অন্তত ২০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ৮০ শয্যার করোনা ইউনিটে ৬৪ জন ভর্তি আছেন। এর মধ্যে বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারত থেকে ফেরা রোগী আছেন ২৫ জন।

হাসপাতালের তিন শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউ ইউনিটে কোনো শয্যা খালি নেই। এদিকে ভারত থেকে ফেরত করোনায় আক্রান্ত একজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। তিনি যাতে পালাতে না পারেন, তার জন্য পুলিশি পাহারায় তাঁকে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালের ৮০ শয্যার করোনা রেড (লাল) জোনে ৬৪ জন ও ইয়েলো (হলুদ) জোনে ২২ জন ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে রেড জোনে ভারতফেরত ২৫ জন ও আইসিইউ ইউনিটে ৩ জন গুরুতর অবস্থায় ভর্তি। এ হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সাপোর্ট না থাকায় ভারতফেরত একজনকে পুলিশি পাহারায় ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

এদিকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টার থেকে জানানো হয়েছে, রোববার ল্যাবের ঘোষিত ফলাফলে যশোরের ২৮০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী, সংক্রমণের হার ২৬ শতাংশ, যা গত এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ।

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় যশোর শহরের দুটি ওয়ার্ড ও ঝিকরগাছা এবং অভয়নগর উপজেলার কয়েকটি এলাকায় মানুষের চলাচলে বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যশোর পৌরসভার ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৩ জন করে করোনায় আক্রান্ত রোগী বাড়িতে চিকিৎসাধীন। এ জন্য এই দুটি ওয়ার্ডে মানুষের চলাচল সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

রোববার দুপুরে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোপ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, এসব ওয়ার্ডের প্রধান সড়কের পাশের ছোট ছোট সড়কে আড়াআড়ি বাঁশ বেঁধে যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে। ঘোপের এম এম খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের সড়ক ও কাজীপাড়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনের পাশের সড়কের মুখে বাঁশ বেঁধে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ভেতরের আরও কয়েকটি সড়কের বাঁশ বাঁধা আছে। ওই সব সড়কে মানুষের চলাচল তেমন দেখা যায়নি।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, শনিবার রাত থেকে চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। রাতেই কিছু কিছু সড়কে বাঁশ বেঁধে দেওয়া হয়। ওযার্ডের ভেতরের প্রধান কয়েকটি সড়ক দিয়ে সবাইকে চলাচল করতে হচ্ছে।

যশোরে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় যশোর পৌরসভার ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে প্রতিপালনে সীমিত পরিসরে জনসাধারণ চলাচল করতে পারবে। বিনা প্রয়োজনে এই দুই ওয়ার্ডের লোকজন ঘরের বাইরে যেতে পারবেন না। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। পুলিশ সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছে।