করোনায় আরও ২১৮ জনের মৃত্যু

ফাইল ছবি: প্রথম আলো

করোনাভাইরাস সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ) দেশে আরও ২১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৯ হাজার ৩৬৯ জন।

আজ শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আগের দিনের তুলনায় আজ করোনায় নতুন রোগীর সংখ্যা কমলেও মৃত্যু বেড়েছে। অবশ্য নতুন রোগী কমলেও পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার প্রায় আগের দিনের মতো ৩০ শতাংশের ওপরেই আছে। আগের দিনের তুলনায় পরীক্ষার সংখ্যা কমে যাওয়ায় আজ নতুন রোগী শনাক্ত কমেছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৩০ হাজার ৯৮০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রোগী শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ২৪ শতাংশ। আগের দিন মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল ৪৫ হাজার ৪৪ জনের। ওই সময় রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১৩ হাজার ৮৬২ জন। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ছিল ৩০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ২১২ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব মিলিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪। মোট মৃত্যু হয়েছে ২০ হাজার ৬৮৫ জনের। আর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ৭৮ হাজার ২১২ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ১৭ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন ৫৫ জন, খুলনা বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ২৭ এবং রাজশাহীতে ২২ জনের। বাকিরা অন্যান্য বিভাগের।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ।

এরপর বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ কমবেশি হলেও প্রায় দুই মাস ধরে দেশে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু কয়েক গুণ বেড়েছে।

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ দেশে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ পালন করা হয়। এ সময় সব ধরনের অফিসের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। ২১ জুলাই ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই বিধিনিষেধ আট দিনের জন্য শিথিল থাকার পর ২৩ জুলাই থেকে আবার দুই সপ্তাহের লকডাউন চলছে।

ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষের শহর থেকে গ্রামে যাওয়া এবং তাদের ফিরে আসায় সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় কারিগরি কমিটি ঈদ ঘিরে বিধিনিষেধ শিথিলের সরকারি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সর্বশেষ তথ্যানুসারে, করোনার ডেলটা ধরনের কারণে বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও ব্যাপক বেড়েছে। বিশ্বে গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে মৃত্যু বেড়েছে ২১ শতাংশ। আঞ্চলিকভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সংক্রমণ নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। এভাবে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

মহামারি শুরুর পর থেকে করোনার ধরনগুলোর মধ্যে ডেলটা সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। এটি আগের যেকোনো ধরনের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশসহ এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৩২ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া এ ধরন।