করোনায় সংক্রমিত বৃদ্ধা পড়ে ছিলেন রাস্তার পাশে

বৃদ্ধা চাঁন ভানুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন ইউএনও আলমগীর হুসাইন।
ছবি: সংগৃহীত

৭০ বছরের বৃদ্ধা। অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন সড়কের পাশে। তীব্র জ্বরে কাতরাচ্ছিলেন। করোনার উপসর্গ থাকায় কেউ ভিড়ছিলেন না কাছে। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ওই নারীকে উদ্ধার করে। তাঁকে ভর্তি করা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। শুক্রবার শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে ঘটেছে এই ঘটনা।

ওই নারীর নাম চাঁন ভানু (৭০)। তিনি উপজেলার কাসিখণ্ড গ্রামের মৃত হামিদ মোল্যার স্ত্রী। হাসপাতালে ইতিমধ্যে তাঁর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে তিনি করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন।

এলাকাবাসী, হাসপাতাল ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধা চাঁন ভানুকে পাওয়া গেছে গোসাইরহাট উপজেলা সদরের মাছ বাজার এলাকায়। সেখানে সড়কের পাশে শুয়ে কাতরাচ্ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তাঁকে সেখানে শনাক্ত করেন এলাকাবাসী। তবে ভয়ে স্থানীয় লোকজনের কেউ তাঁর কাছে যাননি। শুক্রবার ওই নারী অচেতন হয়ে পড়েন। বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মীর। তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর হুসাইনকে জানান।

ইউএনও শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করেন। তাঁকে নিয়ে যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। করোনার উপসর্গ থাকায় নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। শনিবার পরীক্ষার প্রতিবেদন আসে। তাতে জানা যায়, ওই বৃদ্ধা করোনায় সংক্রমিত। বর্তমানে তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, ওই নারীর শারীরিক অবস্থা অনেক নাজুক ছিল। অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়েছিল। চিকিৎসা দেওয়ার পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চাঁন ভানুর ছবি দেখে শনিবার তাঁর স্বজনেরা ইউএনও আলমগীর হুসাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জানান, দুই দিন ধরে ওই বৃদ্ধাকে তাঁরা খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

চাঁন ভানুর ভাই হযরত আলী সরদার বলেন, ‘আমার বোনের স্বামী ও ছেলে নেই। এক মেয়ে ঢাকায় থাকেন। তিন দিন আগে থেকে তাঁর জ্বর-সর্দির কথা শুনেছি। আমরা তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে তাঁকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তিনি কীভাবে ওই বাজারে গেলেন, তা বুঝতে পারছি না।’

স্বজনেরা ইউএনওর সঙ্গে দেখা করার পর হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, চাঁন ভানুর করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে পারেননি। সুস্থ হলে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন স্বজনেরা।

ইউএনও আলমগীর হুসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারীর চিকিৎসার সব ব্যবস্থা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে প্রয়োজন অনুযায়ী তাঁকে পুনর্বাসনেরও উদ্যোগ নেবে উপজেলা প্রশাসন।