কর্মকর্তা পরিষদের কর্মবিরতি অব্যাহত, তদন্তে অনীহা কমিটির

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তাকে বদলির জের ধরে প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কর্মকর্তা পরিষদের বিরোধের অবসান হয়নি। আজ বুধবারও কর্মকর্তা পরিষদ তাদের কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে। কর্মবিরতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নিজ কার্যালয়ে বসতে পারছেন না।

কর্মকর্তা পরিষদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তদন্তে অনীহা প্রকাশ করেছেন খোদ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক। দুই পক্ষ বৈঠকে বসলেই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবসায় অনুষদের ডিন মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবাই এখানে একে অপরের সহকর্মী। সামান্য ভুল–বোঝাবুঝি থেকে একটি বিরোধ হয়েছে। এখানে তদন্ত বা এক পক্ষকে দোষ দেওয়ার কিছু নেই। সবাই এখানে চাকরি করতে এসেছেন। নিজেরা বসে আলোচনা করলেই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি মনে করি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্টোর কর্মকর্তার বদলি নিয়ে প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কর্মকর্তা পরিষদের বিরোধ দেখা দেয়। ১৫ জুন এই বিরোধের জের ধরেই কর্মকর্তারা প্রধান প্রকৌশলীর পথ অবরোধ করে তাঁর গাড়ির চাবি কেড়ে নেন। প্রতিবাদে পরদিন প্রকৌশল বিভাগ এক দিনের কর্মবিরতি পালন করে। প্রকৌশল বিভাগের দাবি, কর্মকর্তার বদলির মিথ্যা অভিযোগ তুলে কর্মকর্তা পরিষদ প্রধান প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করেছেন। অন্যদিকে কর্মকর্তা পরিষদ বলছে, দায়িত্বরত প্রধান প্রকৌশলী অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে এক কর্মকর্তাকে বদলি করায় তারা প্রতিবাদ করেছে। কাউকে লাঞ্ছিত করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। প্রধান প্রকৌশলীর অব্যাহতিসহ আট দফা দাবি তুলে কর্মবিরতি পালন করছে কর্মকর্তা পরিষদ। দাবি না মানা পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার শুরু করা কর্মবিরতির কারণে কর্মকর্তা পরিষদ নেতারা ক্যাম্পাসে এলেও কাজে যোগ দিচ্ছেন না। তাঁরা ক্যাম্পাসে এদিক-সেদিক ঘুরে সময় পার করছেন। রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম কার্যালয়ে এলেও তাঁকে বসতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে তিনি অন্যত্র গিয়ে সময় কাটাচ্ছেন অথবা জরুরি কাজ সেরে ক্যাম্পাস ত্যাগ করছেন। পরে কার্যালয়টি তালাবদ্ধ থাকছে।

যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিদিনই কার্যালয়ে যাচ্ছি, কিন্তু থাকতে পারছি না। বিষয়টি উপাচার্য মহোদয়কে জানানো হয়েছে। তিনি দুই পক্ষকে আলোচনায় বসতে বলেছেন। কিন্তু কেউ আলোচনায় বসছে না। আশা করছি আগামী সপ্তাহে একটা সমাধান হবে।’