কলিমউল্লাহকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপাচার্যের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান।
ছবি: মঈনুল ইসলাম

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ। উপাচার্য ঢাকায় বসে মিথ্যাচার করছেন, শিক্ষামন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছেন, এমন অভিযোগ তুলেছে শিক্ষকদের সংগঠনটি।

নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার ৪৫টি অভিযোগ তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সম্প্রতি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ১০তলা ভবন ও একটি স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজে উপাচার্যের অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে ইউজিসির আরেকটি সরেজমিন তদন্ত কমিটি। এর জন্য উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওই কমিটির প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।

এসব অভিযোগ ও তদন্ত কমিটির সুপারিশ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। সেখানে উপাচার্য অভিযোগ করেন, এসব অভিযোগ ও ইউজিসির এমন তদন্ত শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির আশ্রয়, প্রশ্রয় ও আশকারায় হয়েছে।

আরও পড়ুন

উপাচার্যের ঢাকার সংবাদ সম্মেলনের পর রংপুরে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে তাঁকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ায় তিনি ঢাকায় বসে মিথ্যাচার করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীকে আক্রমণ করে কথা বলেছেন উপাচার্য৷ ইউজিসি নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন। সরকারের উন্নয়নসহ সব বিষয়েই তিনি বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য করেছেন। তাই তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। অতিসত্বর এসব মন্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, তাঁর (কলিমউল্লাহ) সময়ই তো শেখ হাসিনা ছাত্রীহলের নকশা পরিবর্তনসহ যত দুর্নীতি হয়েছে। তাঁর নিকটাত্মীয়দের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভরিয়ে ফেলেছেন। নিজের কাছের লোক দিয়ে সব অনিয়ম করেই চলেছেন। অবশ্যই এসবের জবাব উপাচার্যকেই দিতে হবে। উপাচার্যের শাস্তিসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে প্রত্যাহারের দাবি জানান শিক্ষকেরা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহসভাপতি ও রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এইচ এম তরিকুল ইসলাম, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুল লতিফ।

এদিকে উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে দ্রুত অপসারণ করে বিচার দাবি করেছে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ নামের একটি সংগঠন। আজ এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ দাবি জানিয়ে উপাচার্যের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায়।

আরও পড়ুন