কাঙ্গালিনী সুফিয়ার পাশে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক

কাঙ্গালিনী সুফিয়া। ছবি: সংগৃহীত
কাঙ্গালিনী সুফিয়া। ছবি: সংগৃহীত

'অহন কেউ আহেও না, পাইও না' শিরোনামে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে (৩টা ২১ মিনিট) প্রথম আলোর অনলাইনে একটি খবর প্রকাশিত হয়। যাতে উঠে আসে করোনাকালে লোকশিল্পী কাঙ্গালিনী সুফিয়ার অসহায় জীবনযাপনের চিত্র। খবরটি নজরে আসে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেনের। তাৎক্ষণিক একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে খবর দিয়ে কাঙ্গালিনীকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। পরে বিকেল সাড়ে চারটায় সুফিয়ার হাতে নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেন।

কুষ্টিয়া ডেপুটি নেজারত কালেক্টর (এনডিসি) মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, করোনা আসার পর কয়েক দফায় গুণী শিল্পীকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছিল। প্রথম আলোর নিউজ দেখে জেলা প্রশাসক তাঁকে আবারও নগদ ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া অব্যহত রাখা হবে।

প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে কাঙ্গালিনী সুফিয়া জানিয়েছিলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। শরীর ভালো থাকলে গাইতে ছুটে যান। কিছু আয় হয়, তবে তা–ও নিয়মিত না। লোকগানের এই শিল্পীর সম্বল কেবল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ১০ হাজার টাকা। এই টাকার সঙ্গে গান গেয়ে পাওয়া টাকায় বড় মেয়ে পুষ্প বেগম ও তিন নাতিকে নিয়ে কোনো রকমে চলে যেত শিল্পীর। করোনার কারণে সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংক থেকেও দুই মাস কোনো টাকা তুলতে পারেননি। করোনার এই সময়ে তাই এদিক–ওদিক হাত পেতে চলতে হচ্ছে তাঁকে।

এক প্রশ্নের জবাবে কাঙ্গালিনী সুফিয়া প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘গানবাজনা সব বন্ধ। খুবই দুরবস্থার মধ্যে আছেন। এই কদিন দুই তিন জায়গা থেকে সাহাইয্য আইছিল, কয়েকজন কিছু টাকা দিছিল। ডিসি সাহেব খাবার পাঠাইছিলেন, তাও ম্যালাদিন হইয়া গেছে। অহন কেউ আহেও না, পাইও না।’

কাঙ্গালিনী সুফিয়ার জন্ম ১৯৬১ সালে। গ্রামের অনুষ্ঠানে গান গেয়ে ১৪ বছর বয়সে মানুষের নজর কেড়েছিলেন তিনি। একসময় বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী হিসেবে অন্তর্ভুক্তি পান। তাঁর গানের গুরু ছিলেন গৌর মহন্ত ও দেবেন খ্যাপা। হালিম বয়াতির কাছেও গান শিখেছিলেন তিনি। এ পর্যন্ত ৩০টি জাতীয় ও ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন এই শিল্পী। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া শহরের জেলখানা মোড় এলাকায় এরশাদনগরে সরকারি আবাসনে বরাদ্দ পাওয়া বাড়িতে বসবাস করছেন।