কাল থেকে কলকাতায় বাংলাদেশের বিজয় উৎসব শুরু

কলকাতার পূর্বাঞ্চলীয় সেনা সদর দপ্তরে গতকাল সন্ধ্যায় আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। উপস্থিত আছেন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের জিওসি অনিল চৌহান, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়সহ বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যরাছবি: ভাস্কর মুখার্জি

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ৫০তম বিজয়ের দিন আগামীকাল বুধবার। দিনটি পৃথকভাবে সাড়ম্বরে উদ্‌যাপন করছে কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর কলকাতাস্থ পূর্বাঞ্চল কমান্ড। এ ছাড়া কলকাতার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন দিনটি উদ্‌যাপন করছে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।

কাল থেকে কলকাতায় শুরু হচ্ছে দুদিনব্যাপী  বাংলাদেশের বিজয় উৎসব। কলকাতার উপহাইকমিশন চত্বরে আয়োজন করা হয়েছে এই বিজয় উৎসবের।  করোনার কারণে এবার এ উৎসবের সময়সীমা দুদিন কমিয়ে আনা হয়েছে। এ উৎসব উদ্‌যাপন করা হবে করোনাবিধি মেনে। সবাইকে আসতে হবে মাস্ক পরে।

নয় বছর ধরে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের উদ্যোগে কলকাতায় এই বিজয় উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ১৭ ডিসেম্বর শেষ হবে এই বিজয় উৎসব।

এবারে এই উৎসবের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (বীর প্রতীক)। সভাপতিত্ব করবেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান।

এবারেও এই উৎসবকে ঘিরে দুদিনই থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যোগ দিচ্ছেন কলকাতার নামীদামি শিল্পীরা। থাকছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তথ্য ও চলচ্চিত্র এবং আলোকচিত্র প্রদর্শন।

প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে এই উৎসব।

এদিকে এবারও ষোলোই ডিসেম্বর সাড়ম্বরে উদ্‌যাপন করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কলকাতাস্থ পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড। উৎসবে বাংলাদেশ থেকে যোগ দিয়েছেন সাংসদ মো. আলী আশরাফের নেতৃত্বে ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধা, ৬ জন সেনা কর্মকর্তা, ১১ জন বেসামরিক কর্মকর্তাসহ তাঁদের পরিবারের সদস্য নিয়ে মোট ৫৯ জন প্রতিনিধি। সেনা প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লে. জে. সাহিদুল হক।

এ উপলক্ষে ১৪ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী পূর্বাঞ্চলীয় সেনা সদর দপ্তর ফোর্ট উইলিয়ামে আয়োজন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠানের। সেনাবাহিনীর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে থাকছে মিলিটারি ব্যান্ডের কনসার্ট ও মিলিটারি ব্যান্ডের প্রদর্শন। পূর্বাঞ্চলীয় সেনা সদরে বিজয় দিবসবিষয়ক এক প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছে এবারও।

বিজয় দিবসের এই অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ফোর্ট উইলিয়ামে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল চৌহান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। উপস্থিত ছিলেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে যোগ দেওয়া ৩০ প্রতিনিধি ও তাঁদের পরিবার নিয়ে যোগ দেওয়া ৫৯ সদস্যের দলটি গতকাল সন্ধ্যার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়।

এদিকে কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের উদ্যোগে কাল ১৬ ডিসেম্বর কলকাতায় সাড়ম্বরে উদ্‌যাপিত হচ্ছে বাংলাদেশের বিজয় দিবস। সকালে উপহাইকমিশন চত্বরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে উত্তোলন করা হবে জাতীয় পতাকা। উত্তোলন করবেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান। এরপর এখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হবে। এরপর কলকাতা উপহাইকমিশনের বঙ্গবন্ধু কর্নারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হবে। এরপর বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হবে।