কুমিল্লার দৌলতপুর-ধর্মপুর সড়কের অবস্থাবেহাল

সংস্কার ও উন্নয়ন নেই কুমিল্লা শহরতলির দৌলতপুর এবং ধর্মপুর এলাকার রেলস্টেশন সড়কের। এতে সড়ক দুটি দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

দৌলতপুর থেকে শাসনগাছা পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এবং ধর্মপুরের ৭০০ মিটার রেলস্টেশন সড়ক কুমিল্লা জেলা পরিষদের। গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কগুলো দিয়ে প্রতিদিন রেলস্টেশনের যাত্রী, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী এবং বিআরটিসি বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে।

গত রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরতলির দৌলতপুর টিঅ্যান্ডটি টাওয়ার থেকে শাসনগাছা পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কে কমপক্ষে ৭০টি গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের রসায়ন ভবনের পশ্চিম পাশের সড়কে হাঁটুসম পানি। ধর্মপুর মোড় থেকে রেলক্রসিং পর্যন্ত রয়েছে অর্ধশতাধিক গর্ত। এখানে পণ্যবাহী ট্রাক গর্তে আটকে পড়েছিল। কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কাদা মাড়িয়ে পার হচ্ছিলেন।

এদিকে কুমিল্লা রেলস্টেশনের প্রবেশমুখে পশ্চিম বাগিচাগাঁও সবুজ রেস্টহাউসের সামনের অংশেও গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। রেলস্টেশনের প্রবেশমুখ থেকে উত্তর ও দক্ষিণে প্রায় ২০টি বড় গর্ত। এসব গর্তে প্রায় সারা বছরই পানি জমে থাকে। ভারী যানবাহন চলাচল করায় সড়কটি নষ্ট হয়েছে জানিয়ে স্টেশন রোডের ব্যবসায়ীরা বলেন, গত পাঁচ বছর সড়কটি মেরামত হচ্ছে না।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক গোলাম কিবরিয়া খোন্দকার বলেন, ‘দৌলতপুর সড়ক দিয়ে হাঁটাই দায় হয়ে পড়েছে। সড়কের গর্তে ট্রাক ও যানবাহন আটকা পড়ে ভোগান্তি বাড়ছে।’

কুমিল্লা শিল্প ও বণিক সমিতির সহসভাপতি মো. হুমায়ুন কবির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ধর্মপুর ও দৌলতপুর সড়ক মেরামতের জন্য কেউ এগিয়ে আসে না। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দুটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ট্রাক্টর ও বাস চলাচল করে। অবস্থা দেখে মনে হয় দেশে সরকার নেই।’

জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী আ স ম মোসলেম বলেন, ধর্মপুর পূর্ব চৌমুহনী থেকে শাসনগাছা পর্যন্ত ৭০০ মিটার সড়কটি জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন। জেলা পরিষদ ২০১১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এডিবির ৬১ লাখ ১০ হাজার টাকার বিশেষ বরাদ্দ চেয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি লেখে। স্থানীয় সরকার বিভাগ তখন জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে সড়কটি মেরামত ও সংস্কার করার কথা জানিয়ে চিঠি দেয়। এরপর আর ওই সড়ক নিয়ে কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি।

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আড়াই কিলোমিটারের ওই সড়কের অবস্থা বর্তমানে যাচ্ছেতাই। এ সড়ক মেরামত করতে হলে বড় অঙ্কের বরাদ্দ আনতে হবে। আমরা জরুরিভিত্তিতে ডোবাগুলোতে কিছু খোয়া ফেলব।’

কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রশাসক মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘ওই সড়কের কাজ শেষ করতে হলে বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজন। জেলা পরিষদে তহবিল না থাকায় সেটি হচ্ছে না।’