কুষ্টিয়ায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৫ ঘণ্টায় ৭ করোনা রোগীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে ৭ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এসব রোগীর মৃত্যু হয়।

বেলা তিনটায় প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার। তিনি বলেন, মাত্র পাঁচ ঘণ্টায় এই হাসপাতালে একসঙ্গে এত মৃত্যু এটাই প্রথম। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার রাত আটটা থেকে শুক্রবার রাত আটটা পর্যন্ত) জেলায় নতুন করে ১১২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনার তিনটি ওয়ার্ডে ১০০ শয্যার বিপরীতে বর্তমানে ১১৩ জন রোগী ভর্তি। গত ২০ ঘণ্টায় ১৯ জন নতুন করে পজিটিভ রোগী ভর্তি হয়েছেন। ওয়ার্ডে নতুন করে আর কোনো রোগী ভর্তির সুযোগ নেই। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিকেলে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জরুরি সভায় বসেন।

জানতে চাইলে সভা থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি ভালো না। উপজেলা পর্যায়, এমনকি গ্রাম থেকে রোগী বেশি আসছেন। ২৫০ শয্যা হাসপাতালকে খুবই দ্রুত সময়ে কোভিড ডেটিকেটেড করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আর অক্সিজেন যা আছে এবং যে হারে রোগী ভর্তি হচ্ছেন, তাতে সংকটে পড়তে হতে পারে।

আবদুল মোমেন আরও বলেন, জেলাজুড়ে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করা ছাড়া রোগী বৃদ্ধির হার কোনোভাবেই কমানো যাবে না। এ বিষয়ে জোর দিতে হবে।

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি ১১ জুন মধ্যরাত থেকে অধিক সংক্রমিত কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। তবে এই বিধিনিষেধ অনেকটা কাগজে–কলমেই সীমাবদ্ধ ছিল। মাঠপর্যায়ে তা খুব একটা কার্যকর হতে দেখা যায়নি। গতকাল ওই বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে আরও ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে করোনা প্রতিরোধ কমিটি। তবে আজ সকাল থেকে এই বিধিনিষেধ কিছুটা কার্যকর করতে প্রশাসনের তৎপরতা লক্ষ করা গেছে।

ঈদুল ফিতরের পর থেকে কুষ্টিয়ায় করোনা সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। গত দুই দিনে ২৬৮ জনের পজিটিভ শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৪৮ জন।
সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম ৩ জুন জেলায় কঠোর লকডাউনের সুপারিশ করেছিলেন। জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ এস এম মুসা কবিরও কঠোর লকডাউনের কোনো বিকল্প নেই বলে একই দিন একইভাবে সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু সে সময় প্রশাসন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সুপারিশ কর্ণপাত করেনি।