কুষ্টিয়ায় দেড় মাসের শিশু করোনায় আক্রান্ত

মায়ের কোলে শুয়ে আছে করোনাক্রান্ত দেড় মাস বয়সী শিশু প্রিন্স লাল।
ছবি: প্রথম আলো

হাতে ক্যানুলা লাগানো। নাকে অক্সিজেন মাস্ক। মায়ের কোলে শুয়ে আছে দেড় মাসের শিশু প্রিন্স লাল। মাঝেমধ্যে কেঁদে উঠছে। বুকের দুধ পান করিয়ে শান্ত করার চেষ্টা মা জয়ারাণীর। তবু যেন কান্না থামানো যাচ্ছে না। কারণ, প্রিন্স লাল করোনায় আক্রান্ত।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন প্রিন্স লাল। চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রিন্স নিউমোনিয়ার সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তাই তাকে করোনা ওয়ার্ডে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শহরের বড়বাজার এলাকায় সুইপার কলোনির বাসিন্দা আকাশ লালের ছেলে প্রিন্স লাল।

দাদি জয়ারানী প্রথম আলোকে বলেন, চার-পাঁচ দিন আগে হঠাৎ প্রিন্সের জ্বর আসে। এরপরই তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সোমবার বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রিন্সকে ভর্তি করা হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে করোনা অ্যান্টিজেন টেস্ট করে ওই শিশুর করোনা শনাক্ত হয়। এরপরই তাঁকে করোনা ওয়ার্ডে রাখা হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এর আগে ২০ জুন পাঁচ মাস বয়সী এক শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরপর শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

দেড় মাস বয়সী শিশুর করোনায় আক্রান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ হাসান সরওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। গত এক বছরে কুষ্টিয়ায় শিশুদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কোনো চিত্র ছিল না। কিন্তু ১৫ দিন ধরে প্রতিদিনই অন্তত পাঁচ থেকে সাতজন শিশু করোনার উপসগ৴ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে কুষ্টিয়ায় করোনা ব্যাপক বিস্তার শুরু করেছে। মূলত বড়দের মাধ্যমেই শিশুরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে বলে ধারণা করছেন এই চিকিৎসক। তিনি আরও বলেন, বাড়ির বড়দের খুব সাবধানে শিশুদের কাছে যেতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভালোভাবে সাবান–পানি দিয়ে হাত ধুয়ে তবেই শিশুদের স্পর্শ করতে হবে। পরিবারের যাঁদের নিয়মিত বাইরে যেতে হয়, তাঁদের প্রয়োজন ছাড়া শিশুদের সংস্পশে৴ না যাওয়া উচিত।