কুষ্টিয়ায় শেষ দিনেও মাঠে নামতে পারেনি বিএনপি

প্রচারণার শেষ দিনে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন কুষ্টিয়ার চারটি আসনের নৌকার প্রার্থীরা। তবে মাঠে ছিলেন না ধানের শীষের কোনো প্রার্থী। হামলা-গ্রেপ্তারের ভয়ে তাঁরা মাঠে নামতে পারেননি।

কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফিলিপনগর গ্রামের বাড়িতে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন নৌকার প্রার্থী সরওয়ার জাহান বাদশা। পরে মণ্ডলপাড়ায় ও বিকেলে গোয়ালগ্রামে পথসভা করেন। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সভা করেন রাতে হোসেনাবাদ বাজার এলাকায়। সরওয়ার জাহান বলেন, ভোটের পরিবেশ যেকোনো উপায়ে সুন্দর রাখতে হবে।

এই আসনের ধানের শীষের প্রার্থী রেজা আহাম্মেদ বাচ্চু মোল্লা বুধবার রাতে আট দিন পর কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন। তাঁর প্রচারণা নেই বললেই চলে। কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর তিনি কোথায় আছেন, তা নেতা-কর্মীরা বলতে পারছেন না। তাঁর স্ত্রীর ফোনে কল করলে তিনিও ফোন ধরেননি। বিএনপির এক নেতা বলেন, সবাই গ্রেপ্তার-আতঙ্কে। বুধবার রাতেও ২০ জনকে ধরেছে পুলিশ।

কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে নৌকার প্রার্থী জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু প্রতিদিনের মতো গতকালও পথসভা ও জনসভায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন। মিরপুরের ফুলবাড়িয়া মালিহাদসহ কয়েকটি ইউনিয়নে আধা ঘণ্টা করে প্রচারণা চালান তিনি।

ধানের শীষের প্রার্থী আহসান হাবীব লিংকনকে গতকালও প্রচারণায় দেখা যায়নি। সকাল থেকে তিনি কুষ্টিয়া আদালতের বারান্দায় ছিলেন। একটি মামলার হাজিরা দিতে আদালতে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘হামলা-মামলার ভয়ের মধ্য থেকে কীভাবে নির্বাচন হবে। জামিন নেব, নাকি প্রচারণা চালাব।’

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে নৌকার প্রার্থী মাহবুব উল আলম হানিফ সকাল ১০টায় শহরের পিটিআই সড়কের বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে বের হন। তিনি ঝাউদিয়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া, হাতিয়া ও মাঝপাড়া এলাকায় পথসভায় বক্তব্য দেন। এরপর কুষ্টিয়া শহরে তিনি প্রচারণা শেষ করেন।

এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার হামলার ভয়ে প্রতিদিনের মতো গতকালও বাড়িতে ছিলেন। তিনি এ পর্যন্ত এক দিনের জন্যও মাঠে নামতে পারেননি। গতকাল তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন। এটুকু সান্ত্বনা নিয়েই তিনি প্রচারণা শেষ করেছেন।

কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে কুমারখালী সদরে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন নৌকার প্রার্থী সেলিম আলতাফ জর্জ। এরপর তিনি খোকসার শোমসপুর, জানিপুর, আমবাড়িয়া, ধোকড়াকোল এলাকায় পথসভা করেন। রাতে কুমারখালী সদরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নির্বাচনী কার্যালয় পরিদর্শন করে দলীয় কার্যালয়ে এসে প্রচারণার ইতি টানেন।

কুষ্টিয়ার অন্য তিনটি আসনের চেয়ে এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী এত দিন কিছুটা প্রচারণা চালাতে পেরেছেন। তবে শেষ দিনে এসে পারেননি। দুপুর পর্যন্ত তিনি বাড়িতেই ছিলেন। এ বিষয়ে মেহেদী রুমীর নির্বাচন পরিচালনার প্রধান সমন্বয়ক আবদুর রাজ্জাক বলেন, পুলিশ নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে। এভাবে কিছুই করা যাচ্ছে না।