কৃষিসেবা দেবে তিন অ্যাপ
ফসলের সমস্যা বুঝতে ও সমাধান জানতে আর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না। মুঠোফোনে ইন্টারনেট চালু করে সেখান থেকে তিনটি অ্যাপ ডাউনলোড বা নামিয়ে নিতে হবে। ‘কৃষকের জানালা’, ‘কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা’ ও ‘বালাইনাশক নির্দেশিকা’ নামের ওই তিনটি অ্যাপ এখন থেকে কৃষককে তাঁর প্রয়োজনীয় তথ্য ও সমস্যার সমাধান দেবে।
আজ বুধবার রাজধানীর আ কা মু গিয়াসউদ্দিন মিল্কী মিলনায়তনে আয়োজিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মীদের উদ্ভাবিত অ্যাপভিত্তিক তিনটি সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বক্তারা তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের কৃষি খাতের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ধরে রাখার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির দেওয়া বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী দেশের কৃষি খাতকে এগিয়ে নিতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য সম্প্রসারণ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এটা আপনারা মনে রাখবেন, এই কৃষকদের করের টাকায় আপনাদের বেতন হয়। ফলে কৃষকদের সব ধরনের সেবা তাঁদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে।’
মতিয়া চৌধুরী দেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশংসা করে বলেন, এ দেশের প্রিন্ট মিডিয়া মাঠপর্যায়ের অনেক কৃষির সংকটকে তুলে ধরে সরকারকে সজাগ করছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়া নানা কৃষিপ্রযুক্তি প্রচার করছে। তবে অনেক গণমাধ্যম মতলবি ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার করে। একটি গ্লাসের অর্ধেক পানি থাকলে তারা বলে অর্ধেক খালি। এ ধরনের সংবাদও হয়ে থাকে। কিন্তু তার পরেও তিনি কৃষি খাতের উন্নয়নে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে ফসল উৎপাদনের নানা প্রযুক্তি ও অন্যান্য দরকারি কৃষি তথ্য পেতে ‘কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা’ নামের মোবাইল অ্যাপের উদ্ভাবক কৃষিবিদ মুহাম্মদ শাহদাত হোসাইন সিদ্দিকী, ফসলের রোগবালাই সম্পর্কে জানতে ‘বালাইনাশক নির্দেশিকা’ অ্যাপের উদ্ভাবক কৃষিবিদ সুকল্প দাস এবং পোকামাকড় ও সার সম্পর্কে জানতে ‘কৃষকের জানালা’ অ্যাপের উদ্ভাবক কৃষিবিদ মো. আবদুল মালেক এগুলোর পরিচিতি তুলে ধরেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, আজকে কৃষিপ্রযুক্তিকে সরকার হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। মোবাইল ফোনে অ্যাপের মাধ্যমে সামনের দিনগুলোতে বেশি করে কৃষিসেবা দেওয়া হবে।
এটুআই কর্মসূচির পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী এসব মোবাইল অ্যাপকে জনবান্ধব প্রযুক্তি হিসেবে তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা সামনের দিনগুলোয় এ ধরনের প্রযুক্তি উদ্ভাবনকে আরও সহায়তা দিতে চাই।’ আগ্রহীদের এই খাতে অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তা পেতে কর্মসূচিতে আবেদন করার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক শেখ ইউসুফ হারুন।
‘কৃষকের জানালা’ https://goo.gl/wCn8oU; ‘কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা’ https://goo.gl/3bbVeb; ‘বালাইনাশক নির্দেশিকা’ https://play.google.com/store/apps/details?id=com.pesticideprescriber.gov ঠিকানা থেকে অ্যাপগুলো নামানো যাবে।