কোনো কোনো দেশের অসন্তুষ্টির কারণ খুঁজে দেখছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
ফাইল ছবি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, কোনো কোনো দেশ বাংলাদেশের ওপর অসন্তুষ্ট। এই অসন্তুষ্টির কারণ খুঁজে তা দূর করার চেষ্টা চলছে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। নতুন বছরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির চ্যালেঞ্জ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি  ব্লিঙ্কেনকে লেখা চিঠির জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আমরা সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। আমরা আমাদের বৈদেশিক সম্পর্কের মূলনীতি “কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব” মেনেই কাজ করছি। আমরা সেই নিরপেক্ষ নীতি ধরে রাখতে চাই। আমরা সবার সঙ্গে আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে চাই।’

এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘কিছু কিছু দেশ কী কারণে অসন্তুষ্ট, সেটি আমরা শোধরানোর চেষ্টা করব। তারা কোনো মিথ্যা তথ্যের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে আমরা তাদের সত্য তথ্য দিয়ে বোঝাব। আশা করি, তারা আমাদের বুঝবে। কারণ, ওই সব দেশের নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তারা দায়িত্বশীলও বটে। তা ছাড়া আমরা আমাদের দুর্বলতাগুলোও চিহ্নিত করে তা সংশোধনের চেষ্টা করব।’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা চিঠি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখি কী জবাব আসে। আমরা তাদের জবাবের অপেক্ষায় রয়েছি। আশা করি তাদের জবাবে ইতিবাচক কিছু আসবে, আমরা এ নিয়ে আশাবাদী।’

নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে এ কে আব্দুল মোমেন চিঠি পাঠিয়েছেন ব্লিঙ্কেনকে। এ চিঠিতে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও সংস্থাটির সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার জন্য ব্লিঙ্কেনকে অনুরোধ জানিয়েছেন আব্দুল মোমেন।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাব ও সংস্থাটির সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর গত বছরের ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ রয়েছেন। তিনি এখন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও পড়েছেন তিনি।

এ ছাড়া র‍্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার পর দুই দেশের মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ শুরু হয়। বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্তে বিচলিত হলেও বহুমাত্রিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জোর দিচ্ছে। গত ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ফোন করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনকে।

আরও পড়ুন