ক্যাসিনো-কাণ্ড: মোহামেডান ক্লাব থেকে চাঁদা আদায়কারী সেই ছালাউদ্দিন রিমান্ডে

মোহামেডান ক্লাব থেকে জব্দ করা হয় জুয়া খেলার সামগ্রী। ফাইল ছবি
মোহামেডান ক্লাব থেকে জব্দ করা হয় জুয়া খেলার সামগ্রী। ফাইল ছবি

মোহামেডান ক্লাব থেকে প্রতিদিন চাঁদা আদায়কারী সেই ছালাউদ্দিনসহ দুজনকে আগেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মতিঝিল থানার একটি মামলায় মঙ্গলবার তাঁদের দুই দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। অন্য আসামি হলেন আওলাদ হোসেন।

রাজধানীর আরামবাগ এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে সিআইডি। দুজনই এখন সিআইডির হেফাজতে আটক রয়েছেন। ছালাউদ্দিনের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ইটবাইয়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আবদুল ছাত্তার।

সিআইডি বলছে, আসামি ছালাউদ্দিন ও আওলাদ হলেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার দুই সহযোগী।

ঢাকার আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে সিআইডি বলেছে, আসামি লোকমান হোসেন ভূঁইয়া পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম সদস্য ছালাউদ্দিন। অপরাধের মাধ্যমে করা টাকা সংগ্রহ ও বণ্টনের দায়িত্ব ছিল তাঁর। আওলাদ হোসেন ছালাউদ্দিনের সার্বক্ষণিক সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। মোহামেডান ক্লাবে অবৈধভাবে ক্যাসিনো ব্যবসা স্থাপন ও পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে আসছিল।

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মোহামেডান ক্লাব থেকে এই ছালাউদ্দিন চাঁদা আদায় করতেন। লোকমান হোসেন ভূঁইয়াসহ কয়েকজনের কাছে ওই চাঁদার টাকা পৌঁছে দিতেন। মোহামেডান ক্লাবের ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককেই গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হবে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘ক্যাসিনো চালাতে মোহামেডান ক্লাবকে দিনে চাঁদা দিতে হতো ৫ লাখ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে ছালাউদ্দিনের চাঁদা আদায় করার তথ্য বলা হয়।

আর ৯ জানুয়ারি ‘ক্যাসিনো-ক্যাণ্ডে উদ্যোক্তাদের গায়ে আঁচ লাগেনি’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও ছালাউদ্দিন সম্পর্কে বলা হয়, ছালাউদ্দিন স্থানীয় বহিষ্কৃত কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদের পূর্বপরিচিত।

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই ছালাউদ্দিনই মোহামেডান ক্লাব থেকে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করতেন।

গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর মোহামেডান ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তেজগাঁও থানার মাদক মামলায় লোকমানের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এরপর গত বছরের ১৯ নভেম্বর অর্থ পাচার আইনে লোকমানের বিরুদ্ধে মামলা করে সিআইডি। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮-১৯ সালে ৬৪ লাখ ২০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেন লোকমান। আর অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন ৭৩ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৪ টাকা। সর্বমোট ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকা। লোকমান মোহামেডান ক্লাবের কক্ষ ভাড়া দিয়ে জুয়া ও মাদক ব্যবসার মাধ্যমে আয় করা অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়।