ক্লিন ফিড চ্যানেল না হলে লাইসেন্সের শর্তভঙ্গ হবে: তথ্যমন্ত্রী

বিদেশি চ্যানেলের পরিবেশক ও কেব্‌ল অপারেটরদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, যেসব বিদেশি চ্যানেল বাংলাদেশে ক্লিন ফিড (বিজ্ঞাপন ছাড়া) দেয়, আকাশ ডিটিএইচ সেগুলো চালাচ্ছে। অপারেটররা যদি ক্লিন ফিড চ্যানেল না চালান, তাহলে লাইসেন্সের শর্তভঙ্গ হবে। সুতরাং, শর্তভঙ্গের কাজ কেউ যেন না করেন।

আজ সোমবার দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স—অ্যাটকোর প্রতিনিধিরা ক্লিন ফিড বাস্তবায়নের পদক্ষেপের জন্য তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে এলে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশে কোনো চ্যানেল সরকার বন্ধ করতে বলেনি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সব চ্যানেলের জন্য বাংলাদেশের দ্বার উন্মুক্ত। কিন্তু আইন মেনে দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করে সেই চ্যানেল সম্প্রচার হতে হবে। যেসব বিদেশি চ্যানেল আইনকে তোয়াক্কা করে না, দেশের সংস্কৃতিকে চোখ রাঙায়, সেগুলোর পক্ষে ওকালতি করা সমীচীন নয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের গণমাধ্যমশিল্পের সবার স্বার্থে সরকার আইন অনুযায়ী বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার বা ক্লিন ফিড বাস্তবায়নের কাজ করছে। দেশের স্বার্থের বিপক্ষে কেউ অবস্থান গ্রহণ বা তাদের পক্ষে ওকালতি করা কাম্য না। তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচারের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে দুই বছর আগে থেকে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে এবং আগস্ট মাসের বৈঠকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছিল যে ১ অক্টোবর থেকে এই আইন কার্যকর হবে। কিন্তু এখন একটি মহল বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশি চ্যানেলগুলো পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় ক্লিন ফিড পাঠায়। ক্লিন ফিড পাঠানোর জন্য যে বড় রকমের বিনিয়োগ ও কারিগরি সুবিধা লাগে, এগুলো বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে এগুলো সহজেই করা সম্ভব এবং সেটি সংশ্লিষ্ট চ্যানেল করতে পারে। এই দায়িত্ব প্রথমত, সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের। দ্বিতীয়ত, যাঁরা সেই চ্যানেল ডাউনলিংক করার অনুমতি নিয়েছেন, তাঁদের। তাঁরা ব্যবসা করার স্বার্থেই এসব চ্যানেল ডাউনলিংক করার জন্য অনুমতি নিয়েছেন এবং লাইসেন্স দেওয়ার সময় ক্লিন ফিডের শর্তের কথা বলা আছে। কেব্‌ল অপারেটররাও সেই শর্তের কথা মেনেই লাইসেন্স নিয়েছেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, অনেক কেব্‌ল অপারেটরের লাইসেন্সের দরখাস্ত জমা পড়েছে। কর্তৃপক্ষ সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। শর্তভঙ্গ করলে বা বিভ্রান্তি ছড়ালে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তথ্যসচিব মকবুল হোসেন বলেন, দেশের সব জেলার ডেপুটি কমিশনারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করা হয়েছে। ক্লিন ফিড আইন বাস্তবায়নে সরকার প্রস্তুত আছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

অ্যাটকোর সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী বলেন, সারা পৃথিবীতে ক্লিন ফিডের বিষয়টি রয়েছে। প্রচুর অর্থ দেশ থেকে চলে গেছে। এখন শুধু টেলিভিশনমালিকেরা লাভবান হবেন না, পুরো দেশ লাভবান হবে।

অ্যাটকোর সঙ্গে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাটকোর সিনিয়র সহসভাপতি মোজাম্মেল হক, ডিবিসি২৪ চ্যানেলের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়ের, দীপ্ত টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহিদুল হাসান, দেশ টেলিভিশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান, ডিবিসি২৪ চ্যানেলের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।