খালেদা জিয়া কর্মসূচি নিয়ে নাটক করেছেন

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম

কর্মসূচিতে যাওয়া নিয়ে বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া নাটক করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, বিরোধীদলীয় নেতা নিজেই তাঁর কর্মসূচির প্রতি আন্তরিক ছিলেন না। বেলা ১১টায় কর্মসূচি থাকলেও তিনি ঘর থেকে বের হয়েছেন বেলা তিনটায়। তাতেই বোঝা যায়, তিনি আন্তরিক নন। কর্মসূচির নামে তিনি কেবল নাটক করেছেন।
গতকাল রোববার বিকেলে ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফ এ দাবি করেন।
খালেদা জিয়ার গুলশানের বাড়ি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা, পুলিশের বাধা ও বাড়িতে ফেরত যাওয়া প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘হঠাৎ করে তিনি দুপুরে বের হলেন। উনি সেজে আসলেন। দেখে মনে হলো যেন পার্টিতে যাচ্ছেন। ক্যামেরায় পোজ দিলেন। পুলিশকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করলেন। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা দেখা না করলে পরিণতি ভয়াবহ হবে বললেন। এটা কোনো বিরোধী দলের নেতার কথা হতে পারে?’
বিএনপির ‘গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ কর্মসূচি ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার কর্মসূচি ড্যামসকুইক (Damsquick) হয়ে গেছে। অর্থাৎ বেলুন থেকে বাতাস বের হলে যেমন হয়। হয় আওয়াজ হয়, নয়তো ফুস করে ফেটে যায়। খালেদার কর্মসূচিও তেমনি ফুস হয়ে গেছে। এই কর্মসূচিতে মানুষের আত্মিক কোনো সম্পর্ক নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক দিন যাবৎ বিভিন্ন গণমাধ্যমে গণতন্ত্রের জন্য মার্চ এমনভাবে প্রচার করা হচ্ছিল, যেন কিয়ামত হয়ে যাবে। কই, কিছু তো হলো না। শুধু কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফ বলেন, যত দিন পর্যন্ত খালেদা জিয়া বিরোধীদলীয় নেতা আছেন, তত দিন পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রীয় প্রটোকল পাবেন। তাঁর কর্মসূচির ওপর কোনো বিধিনিষেধ নেই।
হাইকোর্টে কেউ আইনজীবী ছিলেন না: সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘আজ হাইকোর্টে একটা ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেখানে কোনো আইনজীবী ছিল না। সেখানে ছিল বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও শিবিরের ক্যাডাররা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, উপদেষ্টা ওসমান ফারুক ছিলেন। তাঁরা কেউ আইনজীবী ছিলেন না। শীতকালীন ছুটিতে মাত্র দুটি কি তিনটি বেঞ্চ চালু রয়েছে। সেখানে এত আইনজীবী কোথা থেকে এল?’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিচারপতিরা সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে সহিংসতার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।
নাগরিক সমাজ নিরপেক্ষ নয়: গত শনিবার নাগরিক সমাজের এক আলোচনা সভায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচন স্থগিতের আহ্বান জানানোর কঠোর সমালোচনা করেন আশরাফ। তিনি বলেন, ‘এ আলোচনায় বিএনপির নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও জেনারেল (অব.) মাহবুব অংশ নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের একজন নেতাকেও আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এতেই বোঝা যায়, তথাকথিত এই নাগরিক সমাজ কতটুকু নিরপেক্ষ। বিএনপির নেতাদের নেতৃত্বে এই আলোচনা সভা ছিল দলীয়। তাঁরা এক-এগারোর মতো আরেকটি ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছেন।’
গণতন্ত্র না যুদ্ধাপরাধীদের বিচার—একটি মহলের এই বিতর্ক সম্পর্কে সৈয়দ আশরাফ বলেন, গণতন্ত্র ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার একই সূত্রে গাঁথা। একটা ছাড়া অন্যটা হয় না। একটি মহল এই বিতর্ক তুলে ধূম্রজাল সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতা ওবায়দুল কাদের, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।