খালেদার বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থার আহ্বান বিএনপির স্থায়ী কমিটির

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ৫৩ দিন চিকিৎসা পর ১৯ জুন খালেদা জিয়া তাঁর গুলশানের ভাড়া বাসায় ফেরেন
ফাইল ছবি

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভার ও অন্যান্য জটিলতার চিকিৎসা বিদেশের কোনো উন্নত কেন্দ্রে প্রয়োজন। এ পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসক বোর্ডের প্রধান এ এফ এম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তিনি (খালেদা জিয়া) করোনার সংক্রমণ থেকে মুক্ত হলেও কোভিড-১৯-পরবর্তী কয়েকটি জটিলতায় ভুগছেন। তিনি কোনোমতেই ঝুঁকিমুক্ত নন। তাঁর লিভার ও অন্যান্য জটিলতার চিকিৎসা বিদেশে কোনো উন্নত কেন্দ্রে প্রয়োজন। বাংলাদেশে যার সুযোগ তুলনামূলকভাবে কম।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, খালেদা জিয়া শুধু একজন বয়স্ক রাজনীতিবিদ নন, তিনি দেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তাঁর ভূমিকা কিংবদন্তির মতো। তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তিনি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয় নেতা। তাঁর পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা প্রয়োজন। সব ধরনের রাজনৈতিক সংকীর্ণতা থেকে বের হয়ে তাঁর সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেশের মানুষের প্রাণের দাবি। এ অবস্থায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য তাঁকে দেশের বাইরে পাঠানোর জন্য ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি তাঁর মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।

২০ জুন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে দলের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আগে বলিনি। ওনার (খালেদা জিয়া) পরিবার বিদেশে প্রেরণের কথা বলেছিল। আমরা এবার পার্টির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রেজল্যুশন নিচ্ছি যে তাঁর বিদেশে চিকিৎসা দরকার। এর জন্য যা কিছু করা দরকার, সরকারের তা করা উচিত ইমিডিয়েটলি। তার পরের যে স্টেপগুলো আছে, পরে আলাপ-আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ৫৩ দিন চিকিৎসা পর ১৯ জুন খালেদা জিয়া তাঁর গুলশানের ভাড়া বাসায় ফেরেন। হাসপাতালে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে তাঁকে বাসায় নিয়ে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেয় মেডিকেল বোর্ড।

গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। প্রথমে বাসায় তাঁর চিকিৎসা চলে। পরে গত ২৭ এপ্রিল তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৬ দিন পর ৩ মে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাঁকে জরুরিভাবে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। তিনি ৯ মে করোনার সংক্রমণ থেকে মুক্ত হন।