গরু-ছাগলের দখলে পার্ক

বেড়া দেওয়ার পরও রাজশাহীর লালন শাহ পার্কে চলছে অবাধে গবাদিপশু পালন। ছবিটি গত বুধবার দুপুরে তোলা l প্রথম আলো
বেড়া দেওয়ার পরও রাজশাহীর লালন শাহ পার্কে চলছে অবাধে গবাদিপশু পালন। ছবিটি গত বুধবার দুপুরে তোলা l প্রথম আলো

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরের লালন শাহ্‌ পার্কটি বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। তারপরও এর ভেতরে আগের মতোই চলছে অবাধে গবাদিপশু পালন।
স্থানীয় লোকজন পার্কের একাংশ গরুর খামার হিসেবে ব্যবহার করছেন। আর শহরের কসাইয়েরা অস্থায়ী খোঁয়াড় হিসেবে ব্যবহার করছেন পার্কটি। যত্নের অভাবে এটি ভাগাড়ে পরিণত হতে যাচ্ছে।
সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামানের সময় পাঠানপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীর ধারে পরিত্যক্ত জায়গায় প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়েদৃষ্টিনন্দন পার্কটি ২০১৩ সালে উদ্বোধন করা হয়।
সূত্র জানায়, ওই সময় পার্কে ১ হাজার ১৩২ বর্গমিটার আয়তনের একটি ওপেন থিয়েটার, একটি ফুডকোর্ট, ৮২ দশমিক ৮১ বর্গমিটারের দুটি কফিশপ ও ২ হাজার ৫৫৮ দশমিক ৮৫ বর্গমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দোকানগুলো এখনো চালু করা হয়নি।
কয়েক মাস আগে বেড়া দিয়ে পার্কটি ঘিরে প্রবেশমূল্য চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এলাকাবাসীর আন্দোলনের মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে পরে ঘোষণা দেওয়া হয়, পার্কটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
কিন্তু বেড়া দেওয়ার পরও পার্কটির ভেতরে আগের মতোই গবাদিপশু পালন চলছে। কফিশপের দুই পাশে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ছোট ছোট যে চৌবাচ্চা করা হয়েছে, তাতে পানি ও ময়লা জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
গত বুধবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, পার্কের ভেতরে ১০টি গরু ও চারটি মহিষ বিচরণ করছে। গোবরে পার্কের পূর্বের অংশ একেবারে গোয়ালের মতো হয়ে আছে। সেখানে পাওয়া যায় স্থানীয় রফিকুল ইসলামকে। তিনি বলেন, পার্কে তাঁর ১০টি গরু থাকে। কেন পার্কের ভেতরে গরু পালন করেন—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০ বছর ধরে তাঁরা এই জায়গায় পশু পালন করছেন। তাঁদের অন্য কোনো বিকল্প নেই। তাঁদের বাঁধের নিচে চলে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু ওই জায়গা বর্ষার সময় পানিতে ডুবে থাকে।
এদিন পার্কের একাংশে কসাইদের চারটি মহিষ বাঁধা ছিল। সেখানে একজন কসাইও পাওয়া গেলেও তিনি কোনো কথা বলতে চাননি।
জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, পার্কটি চালু করতে একটু সময় লাগবে। যাঁরা গবাদিপশু পালন করছেন, তাঁদেরও বোঝানো হচ্ছে যাতে তাঁরা সেখান থেকে চলে যান। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বেড়া দেওয়ার প্রতিবাদে যাঁরা আন্দোলন করেছিলেন, তাঁদেরও একটু বুঝতে দেওয়া উচিত।’