চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি: সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থা বহাল থাকছে

জায়েদ খান ও নিপুণ
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত থাকছে।

একই সঙ্গে শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনে দুই পক্ষকে (নিপুণ আক্তার ও জায়েদ খান) স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির দেওয়া আদেশ চলমান থাকবে।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে আজ সোমবার আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের ভার্চ্যুয়াল আপিল বিভাগ।

আদালত বলেছেন, দুই পক্ষ (জায়েদ ও নিপুণ) উপস্থাপন করেছেন যে হাইকোর্টে বিষয়টি (রুল শুনানি) মঙ্গলবার শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এ অবস্থায় আবেদনটি (নিপুণের করা) নিষ্পত্তি করা হলো। চেম্বার বিচারপতি যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা চলমান থাকবে।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে নিপুণের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি।

সেদিন চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে নিপুণের আবেদনটি ১৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। একই সঙ্গে শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনে ওই সময়ে দুই পক্ষকে (নিপুণ ও জায়েদ) স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন।

ধার্য তারিখে লিভ টু আপিল করার কথা জানান নিপুণের আইনজীবী। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে নিপুণের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান ও হারুন-উর রশিদ।

অন্যদিকে জায়েদ খানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন, আইনজীবী নাহিদ সুলতানা ও মজিবুল হক ভূঁইয়া ভার্চ্যুয়ালি আদালতে যুক্ত ছিলেন।

গত ২৮ জানুয়ারি শিল্পী সমিতির নির্বাচন হয়। পরদিন ঘোষিত ফলাফলে জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী বলা হয়।

পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন নিপুণ। এরপর আপিল বোর্ড সমাজসেবা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২ ফেব্রুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তর এক চিঠিতে জানায়, আপিল বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ড জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে।

এ অবস্থায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের ২ ফেব্রুয়ারির চিঠি ও আপিল বোর্ডের ৫ ফেব্রুয়ারির সিদ্ধান্ত নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ খান। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।

হাইকোর্টের আদেশে ২ ফেব্রুয়ারির চিঠির কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। পাশাপাশি ২ ও ৫ ফেব্রুয়ারির চিঠি ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি রুল শুনানির জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি দিন রাখেন হাইকোর্ট। এ অনুসারে কাল মঙ্গলবার হাইকোর্টে রুলের ওপর শুনানি হওয়ার কথা।

পরে নিপুণের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চেম্বার বিচারপতির দেওয়া আদেশ বহাল থাকছে। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হওয়ায় আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত বহাল থাকছে। আপিল বোর্ড নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছেন। ফলে তাঁর কাজ চালিয়ে যেতে বাধা নেই।’

তবে জায়েদ খানের আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল থাকছে। চেম্বার আদালত সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনে দুই পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কেউই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বসতে পারবেন না।’