সাইবার বুলিং প্রতিরোধ দিবস আজ
চাই ইন্টারনেটে সচেতন সুনাগরিক
আজ শুক্রবার সাইবার বুলিং প্রতিরোধ দিবস। জুন মাসের তৃতীয় শুক্রবার বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়। বাংলাদেশে এর আগে সেভাবে পালন করা না হলেও এবার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান দিবসটি পালন করছে। ‘স্টপ সাইবার বুলিং ডে’ ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৬০ শতাংশ অনলাইন বুলিং বা হয়রানির শিকার হয়। বাংলাদেশেও দিন দিন বাড়ছে এর মাত্রা। কীভাবে অনলাইনে হয়রানি থেকে শিক্ষার্থীসহ সবাই সচেতন হতে পারে, সে বিষয়ে কথা বলেছেন বিশিষ্টজনেরা।
পরিবর্তন আসতে হবে পরিবার ও স্কুল থেকে
ইয়াসির আজমান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, গ্রামীণফোন
সাইবার বুলিং একটি বৈশ্বিক সংকট। সুনাগরিক হিসেবে এই সংকটকে সম্মিলিতভাবেই প্রতিরোধ করতে হবে। বিশেষ করে করোনার এই সময়ে বিষয়টিতে তৎপরতা বাড়াতে হবে। কেননা এখন ডিজিটালনির্ভরতা অনেক বেড়ে গেছে।
অনলাইনে আমরা অনেক সময় খুব সহজেই মানুষকে কষ্ট দিয়ে ফেলি, যে আচরণ হয়তো আমরা সামনাসামনি করতাম না। বাস্তব জীবনে সুনাগরিক হয়ে উঠতে আমরা পরিবার, বন্ধু বা শিক্ষক—সবার সাহায্য পাই। কিন্তু অনলাইনে সুনাগরিক হয়ে উঠতে খুব বেশি কথাও বলি না, আবার ভাবিও না। এর একটি দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব আছে আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপরে। পরিবর্তন আসতে হবে পরিবার আর স্কুল থেকে। তাই শিক্ষাক্রমে অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়টি যুক্ত করতে আমরা ইউনিসেফকে সঙ্গে নিয়ে অনেক দিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে। আমি বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ দিতে চাই এ রকম সময় উপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। ইন্টারনেটে সচেতন সুনাগরিক গড়ে তুলতে হবে, আমার মনে হয় তাতে আমরা ভালোভাবেই এগিয়ে চলেছি।
দেশজুড়ে গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা আট কোটির বেশি, তাঁদের মধ্যে চার কোটির বেশি গ্রাহক গ্রামীণফোনের ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ২০১৪ সাল থেকে গ্রামীণফোন শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সংবেদনশীল করতে দেশব্যাপী স্কুলগুলোতে আউটরিচ প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। এতে সঙ্গে আছে ইউনিসেফ। এর বাইরে নিরাপদ ইন্টারনেট গাইডবই তৈরি করেছি। এতে ইউনিসেফের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক যুক্ত হয়েছে। চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ অনলাইন সুরক্ষাসহ যেকোনো শিশু সুরক্ষা বিষয়ে সহায়তা দিচ্ছে।
শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা ক্যাম্পেইন ‘বি স্মার্ট ইউজ হার্ট’র মাধ্যমে আমরা ২ লাখ ৭০ হাজারের বেশি অভিভাবককে ইন্টারনেট বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে। অনলাইন শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১০ লাখের বেশি শিশুকে সচেতন করা হয়েছে।
অনলাইনে সুরক্ষা জ্ঞানভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন ডিজিওয়ার্ল্ড বাংলায় চালু করা হয়েছে। ‘জানতে হবে কোথায় থামতে হবে’ নামে দেশব্যাপী ক্যাম্পেইন করে গ্রামীণফোন। এসব কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য অফলাইনে আমরা যেমন নির্দিষ্ট কিছু বিষয় মেনে চলি, তেমনি ইন্টারনেটের অবারিত দুনিয়াতেও আমাদের কিছু বিষয় সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
শিক্ষার্থীদের অনলাইনে বিপদে পড়ার আশঙ্কাটাও বাড়ছে
অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর
সাইবার বুলিংয়ের বিষয়টি আমাদের ভাবাচ্ছে। আমরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। করোনার সংক্রমণের পর থেকে গত দেড় বছরে সাইবার বুলিং বাড়ছে বলেই ধারণা করছি। আমাদের কাছে তথ্য নেই, তবে এখন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার জন্যই বেশি সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে বিপদে পড়ার আশঙ্কাটাও বাড়ছে। আমরা ইউনিসেফের সহায়তায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে করণীয়, শিক্ষার্থীরা বিপদে পড়লে করণীয়—এসব নিয়ে ছোট ছোট ভিডিও তৈরির কাজ করছি। এই ভিডিওগুলো করোনার সময়ে অনলাইন ক্লাসে ও করোনার পরে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের দেখানো হবে। সাইবার বুলিংয়ের ভয়াবহতা যেভাবে বাড়ছে, শুধু পাঠ্যপুস্তকে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করলেই সমাধান হবে না। পাঠ্যপুস্তকে বিস্তারিত বলাও সম্ভব নয়। তাই শিক্ষার্থীদের অন্যান্য মাধ্যমেও সচেতন করতে হবে।
আমি শিক্ষার্থীদের বলব, পড়াশোনা এবং বিভিন্ন বিষয়ে নিজের দক্ষতা বাড়াতে অবশ্যই ইন্টারনেট ব্যবহার করবে। তবে যথেচ্ছভাবে এর ব্যবহার করলে অভিভাবকেরা যেন তোমাদের বিরত করেন। তাই নিরাপদ ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে, বুঝতে হবে। আর শিক্ষার্থীদের কেউ যদি বিপদে পড়েই যাও, তাহলে কখনোই গোপন করবে না। অভিভাবক, শিক্ষক বা বড় কাউকে অবশ্যই ঘটনার কথা জানাতে হবে। গোপন রাখলে সমস্যার সমাধান করা যাবে না, সমস্যা বাড়তেই থাকবে।
অনলাইনেও কিন্তু আমাদের আচরণ সম্পর্কে সবাই জানতে পারছে
সারা যাকের, চেয়ারপারসন, এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটি
আমাদের নতুন প্রজন্মকে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। একজন সুনাগরিক বাস্তব জীবনেও যেমন সচেতন ও দায়িত্বশীল আচরণ করেন, অনলাইন মাধ্যমকেও সেভাবে গুরুত্ব দেন। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের নির্দিষ্ট কমিউনিটি গাইডলাইন রয়েছে—একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি তা অনুসরণ করেন, পরিচয় গোপন করে অন্যের ক্ষতি সাধন করেন না এবং সন্দেহজনক কোনো আচরণ করেন না। আমাদের বুঝতে হবে, অনলাইনেও কিন্তু আমাদের আচরণ সম্পর্কে সবাই জানতে পারছে।
যেকোনো ধরনের বুলিং বা হয়রানি শিশুদের দীর্ঘ মেয়াদে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নতুন প্রজন্ম সঠিকভাবে না জানা-বোঝার কারণে অনেক ক্ষেত্রে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে।
সাইবার বুলিং প্রতিরোধে সবার নিজেদের অবস্থান থেকে কথা বলা উচিত। সাইবার বুলিং বা এ ধরনের কোনো বিষয় নজরে এলে তা এড়িয়ে না গিয়ে, প্রতিরোধ করতে হবে; প্রয়োজনে আইনি সহায়তা গ্রহণ করতে হবে। সামাজিকভাবে এ সংকটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। অনলাইন বিশ্ব প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হচ্ছে, এখানে প্রতিদিনই নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হচ্ছে। তাই ডিজিটাল বিশ্বে বুলিং প্রতিরোধে বাবা-মা, অভিভাবক ও শিক্ষকদের এ ব্যাপারে সব সময় আপ-টু-ডেট থাকতে হবে। নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বা জোর করে সাইবার বুলিং প্রতিরোধ করা যাবে না। আমরা যেমন কীভাবে রাস্তা পার হতে হয়, সন্তানদের সে শিক্ষা দিই, অনলাইনেও সে কী করতে পারে বা তার কী করা উচিত নয়, সে ব্যাপারে বোঝাতে হবে, সচেতন করে তুলতে হবে। পারিবারিক মূল্যবোধ এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
অনলাইনে নিরাপদ থাকার জন্য নিয়মকানুন শিশুদের জানাতে হবে
শাবনাজ জাহেরীন, শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ, ইউনিসেফ বাংলাদেশ
করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে দেশব্যাপী স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুরা আরও বেশি করে অনলাইন টুলসের দিকে ঝুঁকে পড়তে শুরু করেছে। মহামারির কারণে সৃষ্টি হওয়া নানা অনিশ্চয়তা ও নিজেদের কাজের ভারসাম্য রেখে অনলাইন শিক্ষা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হচ্ছে মা-বাবা ও অভিভাবকদের। তাই অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষা দিতে আমাদের প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
এই বিষয়ে দাতা, ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, সরকারের মতো অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করেছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ। উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য নীতিনির্ধারক পর্যায়ে গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রক কাঠামো, পাঠ্যসূচি ও নীতিমালায় অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি অনুপস্থিত। তাই জাতীয় পাঠ্যসূচিতে নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
শিশু সুরক্ষা সেবার সঙ্গে যুক্ত বিষয়গুলো তুলে ধরতে কার্যকর রিপোর্টিং, সাড়া দানের বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইন নিরাপত্তার বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালাতে হবে। এই রকম জাতীয় কর্মসূচি চালাতে প্রয়োজনীয় অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে। সাইবার বুলিং ঠেকাতে জাতীয় কর্মসূচি চালানোর অব্যাহত প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুরা যাতে অনলাইনের বাজে বিষয়বস্তুগুলো না পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে এবং অনলাইনে নিরাপদ থাকার জন্য নিয়মকানুন ও পদক্ষেপগুলো শিশুদের জানাতে হবে। এসব কাজ বাবা-মাকেই নিশ্চিত করতে হবে। কোডিভ-১৯ মহামারিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অনলাইন সুরক্ষার বিষয়ে সক্ষমতা গড়ার কৌশল ও সাড়াদান কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষক ও বাবা-মায়ের উপযোগী এই কৌশল মাল্টিমিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ও কিশোর ক্লাবের মাধ্যমে চালু করা হয়েছে।
মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও অন্যকে সম্মান দেওয়া যায়
তাহসান রহমান খান, গায়ক
যেকোনো মানুষের ওপর বুলিংয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তারকাদের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক তারকা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছবি দিয়েছেন, সেখানে সেই তারকা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়েও বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে। কিছু মানুষ সব সময় তাঁদের চারপাশে নেতিবাচকতা ও ঘৃণা ছড়িয়ে দিতে পছন্দ করেন। এটা আসলে তাঁদের হীনম্মন্যতার প্রকাশ। তবে এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, সব জায়গায় আছে। এটা একধরনের মানসিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে।
এখন আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে, কাউকে বাজে কথা বলা বা খারাপ মন্তব্য করার মধ্যে বীরত্ব নেই। বিশ্বজুড়েই বেশির ভাগ তারকা নানা কারণে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন না। আবার একই সঙ্গে এটাও সত্য, ধীরে ধীরে এ প্রবণতার পরিবর্তন ঘটছে। এখন তারকারাও সাইবার বুলিং বা অনলাইনে হয়রানির বিরুদ্ধে কথা বলছেন, প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন; যা অনেক মানুষকে উৎসাহিত করছে এমন অপরাধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে।
অনলাইন সচেতনতা বাড়াতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে হবে। আমি গ্রামীণফোনের ‘জানতে হবে কোথায় থামতে হবে’ ক্যাম্পেইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। মানুষকে সচেতন করে তুলতে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। বুলিং প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের শক্তিকেই আমরা ব্যবহার করতে পারি। আমাদের সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে—ইন্টারনেটের সম্ভাবনা বাস্তবায়নের সুযোগ যেমন আমাদের হাতে, তেমনি এর অপব্যবহারও আমাদের মাধ্যমেই ঘটে। আমরা দায়িত্বশীল হলে সাইবার বুলিংও প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বুলিং প্রতিরোধে নতুন প্রজন্মকে বোঝাতে হবে, বাজে মন্তব্যের মাধ্যমে নিজের কুরুচিপূর্ণ মনোভাবের প্রকাশ ঘটে। মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও অন্যজনকে সম্মান দেওয়া যায়, কদর্য কথা বলার প্রয়োজন নেই। আমাদের ইতিবাচক অনুভূতির চর্চা করতে হবে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা কোনো গুজবে বিশ্বাস করবেন না। আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
ইন্টারনেট পেনসিল নয় যে লিখে তা আবার মুছে ফেলা যাবে
সাদাত রহমান, আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার বিজয়ী, সিইও–সাইবার টিনস
সাইবার বুলিং কথাটার সঙ্গে এখন আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। কিছুদিন ধরেই নিউজফিডে 'Stop Cyberbullying' হ্যাশট্যাগ চোখে পড়ছে। সাইবার বুলিংয়ের প্রভাব যে কতটা কষ্টের হতে পারে, তা শুধু বুলিংয়ের শিকার যে হয়, সে–ই বুঝতে পারে।
বিশেষ করে কিশোর–কিশোরীরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে একদমই ভেঙে পড়ে।
আমরা প্রায় সময় মজা করে বন্ধুদের অথবা কোনো সেলিব্রিটির পোস্টে অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করে মজা পাই। কিন্তু একবারও যাঁর প্রোফাইলের নিচে মন্তব্য করলাম, তিনি কষ্ট পেলেন কি না ভেবে দেখি না। মনে রাখতে হবে, ইন্টারনেট পেনসিল নয় যে লিখে তা আবার মুছে ফেলা যাবে। ইন্টারনেট হচ্ছে কলমের মতো। কোনো মন্তব্য বা খুদে বার্তা পাঠানোর আগেই তা নিয়ে ভাবতে হবে। স্কুলে বুলিংয়ের শিকার হয়নি এ রকম শিক্ষার্থী হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমার মনে হয়, ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের ভালো করে শেখাতে হবে যে কাউকে বুলিং করা যাবে না, সেটা অনলাইনে হোক বা অফলাইনে। শুধু পরিবারের ওপর দায়িত্ব দিলেই হবে না, বিদ্যালয়কেও এই ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে; বিশেষ করে পাঠ্যপুস্তকে একটি বিশেষ অধ্যায় রাখা উচিত। আর যারা সাইবার বুলিং করছে, তাদের কোনোভাবেই সমর্থন করা যাবে না।