চাকা পায়ে হাজার কিমি

মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে শুরু হয়েছে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া রোলার স্কেটিং। গতকাল বিকেলে কক্সবাজার শহরের রিং রোড এলাকায়।  ছবি: সংগৃহীত
মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে শুরু হয়েছে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া রোলার স্কেটিং। গতকাল বিকেলে কক্সবাজার শহরের রিং রোড এলাকায়। ছবি: সংগৃহীত

বাস-অটোরিকশাকে পাশ কাটিয়ে শাঁ শাঁ করে এগিয়ে চলছেন তাঁরা। তবে কোনো বাহনে চেপে নয়। তাঁরা ছুটছেন চাকাযুক্ত বিশেষ জুতা পরে, অর্থাৎ রোলার স্কেটিং করে। এভাবে তাঁরা পাড়ি দেবেন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার প্রায় হাজার কিলোমিটার পথ। রোমাঞ্চকর এ যাত্রা খেলার অংশ হিসেবে নয়, মাদকের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে।

‘মাদককে রুখব, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ব’—এই প্রতিপাদ্য নিয়ে গত সোমবার দুপুরে টেকনাফ উপজেলা পরিষদ থেকে শুরু হয়েছে এ গতিময় ছুটে চলা। এতে অংশ নিয়েছেন ২০ জন স্কেটার। ১৮ দিনের যাত্রা শেষে তাঁরা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় পৌঁছাবেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টায় তাঁরা ১৪০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়ায় পৌঁছান।

শোভাযাত্রার মাধ্যমে এই যাত্রার উদ্বোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম, নারী ভাইস চেয়ারম্যান তাহেরা আক্তার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও স্কেটিং দলনেতা আরশাদ আলম প্রমুখ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে ঢাকা বিডি স্কেটিং ক্লাব এটির আয়োজন করেছে। আর এতে সহযোগিতা করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

টেকনাফ মাদকের রুট হিসেবে পরিচিত, তাই সেখান থেকে এ যাত্রা শুরু করা হয়েছে বলে জানান স্কেটিং দলের দলনেতা আরশাদ আলম। তিনি বলেন, তাঁরা কক্সবাজার, চকরিয়া, লোহাগাড়া, কেরানীহাট, চট্টগ্রাম, সীতাকুণ্ড, ফেনী, কুমিল্লা, দাউদকান্দি, ঢাকা, কালিয়াকৈর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, সৈয়দপুর, দশমাইল, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় হয়ে ২৩ জানুয়ারি তেঁতুলিয়া উপজেলায় গিয়ে পৌঁছাবেন। সেখানেই তাঁদের যাত্রা শেষ করবেন।’

২০ জন স্কেটারের এই যাত্রার উদ্দেশ্য নিছকই স্কেটিং দক্ষতা দেখানো নয়। ‘মাদককে না বলুন’ স্লোগান নিয়ে মাদকবিরোধী প্রচারণা এবং মাদকের কুফল সম্পর্কে প্রচারণা চালাতেই মূলত দূরপাল্লার এ অভিযান—বললেন দলনেতা আরশাদ আলম। এই যাত্রাপথে স্কেটার দল প্রতিদিন কমপক্ষে দুটি বিদ্যালয় এবং লোকসমাগম স্থানে মাদকবিরোধী প্রচারণা ও প্রচারপত্র বিতরণ করবে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সোমেন মণ্ডল বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির আলোকে মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে তরুণসমাজকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। টেকনাফ-তেঁতুলিয়া পর্যন্ত প্রায় ১০০০ কিলোমিটার স্কেটিং রাইড এই কার্যক্রমেরই অংশ। এতে মাদকের বিরুদ্ধে মানুষ আরও সোচ্চার ও সচেতন হবে।