চাপের কারণে অনেকে সক্রিয় থাকতে পারেনি

দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির অনেক মেয়র প্রার্থী প্রচারের শুরু থেকে ভোটের ফল ঘোষণা পর্যন্ত মাঠে সক্রিয় ছিলেন। আবার অনেকে সেভাবে সক্রিয় ছিলেন না। প্রথম আলো বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছে বিএনপির দুজন মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে। তাঁদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম গত শনিবার অনুষ্ঠিত ভোটে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। আর শরীয়তপুর পৌরসভায় নির্বাচনে ভোটে পরাজিত হয়েছেন লুৎফর রহমান ঢালি। টেলিফোনে দুজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর ডেপুটি হেড অব রিপোর্টিং ইমাম হোসেন সাঈদ

লুৎফর রহমান ঢালি

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের পক্ষ থেকে সেভাবে বাধা না থাকলেও শরীয়তপুর পৌরসভার নির্বাচনে ভোটের প্রচারে আপনি খুব একটা সক্রিয় ছিলেন না, এমন অভিযোগ রয়েছে।

লুৎফর রহমান ঢালি: ভোটের প্রচার শুরুর পর প্রথম এক সপ্তাহ সব ঠিক ছিল। ভোটের মাঠ যখনই জমে উঠল, তখনই প্রশাসন বিপক্ষে চলে গেল। প্রশাসনের লোকদের উপস্থিতিতেই আমার লিফলেট বিতরণে বাধা এল, পোস্টার লাগানোর পরপরই সব ছিঁড়ে ফেলা হলো। এমনকি মিছিলেও হামলা হলো। এসব বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: ভোট নিয়ে আপনার পৌরসভায় বিএনপির স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস, আগ্রহ সেভাবে দেখা যায়নি, কেন?

লুৎফর রহমান ঢালি: প্রশাসন নিরপেক্ষ না থাকলে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানো সম্ভব হয় না। দলের নেতা-কর্মীদের নানাভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছিল প্রশাসন থেকে। চাপের কারণে অনেকে ঝামেলা এড়াতে সেভাবে শেষ পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারেনি। আর শরীয়তপুর বিএনপিতে গ্রুপিং আছে। আমি নির্বাচন উপলক্ষে সবাইকে এক করতে পারলেও প্রশাসনের ভয়ে অনেকে পুরোটা সময় মাঠে থাকেনি। আরেকটি বিষয়, পৌরসভা নির্বাচনে দলের জেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে প্রচারে দলীয়ভাবে যুক্ত করা দরকার। তারা প্রচারে থাকলে স্থানীয়ভাবে গ্রুপিং থাকলেও সবাই সক্রিয় হবে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: অনেক পৌরসভায় এবার প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বড় ধরনের কোনো অভিযোগ ওঠেনি।

লুৎফর রাহমান ঢালি: বিএনপি যেসব এলাকায় শক্তিশালী, সেখানে প্রশাসনের আচরণ এক রকম, আবার যেসব এলাকায় বিএনপির ভোটার তুলনামুলক কম, সেখানে প্রশাসন আরেক রকম আচরণ করে। সুষ্ঠু ভোটের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা দরকার।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেতে বিএনপির নেতাদের মধ্যে যত আগ্রহ দেখা যায়, পরে ভোটের প্রচার-প্রচারণায় ততটা আগ্রহ দেখা যায় না, কেন?

লুৎফর রহমান ঢালি: নির্বাচনের এখন যে অবস্থা, তাতে ফল কী হবে, সেটি নেতা-কর্মীরা আগে থেকেই জানে। এ অবস্থায় অনেক প্রার্থী সেভাবে ‘ইনভেস্ট’ করতে চায় না। আর ভোটের রাজনীতিতে না থাকলে নেতা-কর্মীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে, আস্থা হারিয়ে ফেলবে, তখন দল আর থাকে না। যে কারণে বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে। আর ভোটের মাঠে না থাকলে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হবে।