চালকের বিরুদ্ধে মামলা নেই, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তিন মামলা

কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাসচাপায় এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাসে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। তবে চালকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতা-কর্মীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিবুল ইসলাম জানান, আজ সোমবার বেলা একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থানার পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। এ ছাড়া ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনায় জড়িত লোকজনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও দুটি মামলা করা হয়েছে।

ওসি মহিবুল ইসলাম জানান, বাসে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা দেড় হাজার শিক্ষার্থীকে আসামি করে একটি মামলা করেছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পৃথকভাবে একটিতে ৫০০ এবং অপরটিতে ৪০০ অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীকে আসামি করে মোট দুটি মামলা করেছে। বাসচালকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, এ ব্যাপারে এখনো কোনো মামলা করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা একটি বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান টিটু। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা ৩৪টি বাসে আগুন দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অন্তত নয়টি বাস ভাঙচুর করেন। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামির কথা উল্লেখ করায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে আছেন বলে জানালেন। তাঁদের আশঙ্কা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতা ও ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি রকিব মো. হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ছাত্র নিহতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো মামলা না করে ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানি করার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতা ও তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনা প্রমাণ করে যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা শিক্ষার্থীদের অভিভাবক হিসেবে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মসলেম উদ্দিন দাবি করেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন ও উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় একটি এবং বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আরেকটি মামলায় অজ্ঞাতনামা এক হাজার শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে।’ তাঁর দাবি, ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তবে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।