চিঠির সাড়ে ছয় মাস পর করতোয়ায় উচ্ছেদ অভিযান

নদী কমিশনের চেয়ারম্যানের নির্দেশের সাড়ে ছয় মাস পর আংশিক তালিকা হাতে নিয়েই বগুড়ায় করতোয়া নদীর অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন এ অভিযান শুরু করবে।

গত সোমবার জেলা নদী রক্ষা কমিটির এক সভায় করতোয়া দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার এ সিদ্ধান্ত হয়। প্রথম দফায় নদীর অবৈধ ৩০ দখলদারের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আলীমূন রাজীব প্রথম আলোকে বলেন, অনেক আগেই করতোয়া নদীর ৩০ দখলদারের এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল। ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি ওয়েবসাইটে এই দখলদারের তালিকা প্রকাশও করা হয়। সাত দিন সময় বেঁধে দিয়ে দখলদারদের কাছে করতোয়া নদীর সীমানা থেকে অবৈধ স্থাপনা নিজে সরিয়ে নিতে ২৫ ফেব্রুয়ারি উচ্ছেদ নোটিশ পাঠানো হয়। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি করতোয়া নদী দখলদারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তমাল হোসেন বলেন, সিএস নকশা ধরে করতোয়া নদীর সীমানায় অবৈধ দখলদারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির কাজ চলছে। এতে কমপক্ষে দুই মাস লাগবে।

জেলা প্রশাসনের সরকারি ওয়েবসাইটে করতোয়া নদী দখলদারের তালিকায় রয়েছে বেসরকারি সংস্থা ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস), বগুড়া পৌরসভা, শহরের মালতিনগর এলাকার মোহাম্মদ বাদশা, একই এলাকার মোছা. হাজেরা বেওয়া, বাহালুল ইসলাম, আবদুস সাত্তার, লাল মিয়া, বুলু মিয়া, জাকির হোসেন, খলিলুর রহমান, মাটিডালি এলাকার আরিফ হোসেন, নাটাইপাড়ার সাইদুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, মশিউর রহমান, লুৎফর রহমান, আরিফা বেগম, আবুল কাশেম, বজলুর রশিদ, বজলার রহমান, মো. মিল্টন, গৌর দাস, অনিল কর্মকার, গোপাল চন্দ্র দাস, রাধা চন্দ্র দাস, প্রহল্লাদ, বগুড়া ডায়াবেটিকস হাসপাতাল, গোপীনাথ মন্দির ও সাহেব বাজার বায়তুল হামদ জামে মসজিদ। দখলদারের তালিকায় একাধিক স্থানে নাম রয়েছে টিএমএসএস এবং বগুড়া পৌরসভার নাম। টিএমএমএসএস করতোয়া নদীর ৪ দশমিক ৯০ একর জায়গা দখল করে ক্যানটিন, ছাত্রাবাস, নার্সারি ও পুকুর নির্মাণ করেছে বলেও তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।

অবশ্য বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), করতোয়া নদী বাঁচাও নেটওয়ার্ক, টিআইবি-সনাক, সুজন, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বহু সংগঠন সিএস নকশা অনুযায়ী করতোয়া নদীর অবৈধ দখলদারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান এবং ফৌজদারি মামলা করে আইনের আওতায় এনে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আসছে।