চুয়াডাঙ্গায় কোয়ারেন্টিনে থাকা ভারতফেরত নারীর মৃত্যু

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

চুয়াডাঙ্গায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকা ভারতফেরত এক বাংলাদেশি নারী মারা গেছেন। ক্যানসারে আক্রান্ত ওই নারী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মারা যান। এ নিয়ে এক সপ্তাহে ভারতফেরত তিনজন মারা গেলেন। যাঁদের মধ্যে একজন কোভিড-১৯ এবং দুজন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

সর্বশেষ মারা যাওয়া ওই নারীর নাম মোহচেনা বেগম (৪২)। তিনি দিনাজপুর জেলার মহাব্বতপুরের প্রয়াত মকসেদ আলীর স্ত্রী। সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য ছেলে মোবাশ্বের হোসেনকে (২২) নিয়ে তিনি ভারতে গিয়ে আটকা পড়েছিলেন।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও ) এ এস এম ফাতেহ আকরাম প্রথম আলোকে জানান, ২১ মে মোহচেনা বেগম ও তাঁর ছেলে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা বন্দর হয়ে প্রবেশ করেন। জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় তাঁদের ওই দিন থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চত্বরের নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।

আরএমও এ এস এম ফাতেহ আকরাম জানান, কোয়ারেন্টিনে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়ায় মোহচেনা বেগমকে গত বুধবার বিকেলে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে মারা যান মোহচেনা। তিনি বলেন, নিহত নারীর মরদেহ করোনা প্রটোকল মেনে দাফনের জন্য পুলিশি প্রহরায় আজ শুক্রবার দিনাজপুরে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে কোয়ারেন্টিনে থাকা এক নারী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ মে গতকাল দুপুরে মারা যান। মৃত ওই নারীর নাম রোকেয়া বেগম (৪৫)। তিনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডু থানার মুরাদনগরের মো. শহিদুল্লাহর স্ত্রী।

সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মো. শহিদুল্লাহ তাঁর ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রী রোকেয়া বেগমকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য সম্প্রতি ভারতে যান। সেখানে অবস্থানকালে লকডাউন ঘোষণা হলে দুজনেই আটকা পড়েন। ১৮ মে তাঁরা চুয়াডাঙ্গা দর্শনা বন্দর হয়ে বাংলাদেশে ফেরেন।

এ ছাড়া ২০ মে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকাকালীন ভারতফেরত করোনায় আক্রান্ত কিশোর শাকিব হাসান (১৭) মারা যায়। শাকিব চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা কলেজপাড়ার মিজানুর রহমানের ছেলে।

মিজানুর রহমান জানান, তাঁর ছেলে শাকিব ক্যানসারে আক্রান্ত ছিল। চিকিৎসার জন্য ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে সম্প্রতি তাঁরা ভারতে গিয়ে লকডাউনে আটকা পড়েন। এরপর ১১ মে যশোরের বেনাপোল বন্দর হয়ে দেশে ফেরেন। নমুনা পরীক্ষায় ছেলে ও স্ত্রীর করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। বেনাপোল থেকে ১২ মে চুয়াডাঙ্গায় পাঠানো হয়। সেই থেকে শাকিব ও তাঁর মাকে ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়। তিনি একই হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে থাকেন। আইসোলেশনে থাকাকালীন ২০ মে দিবাগত রাতে শাকিব মারা যান।

কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনা জেলা কমিটির সভাপতি ও রোগনিয়ন্ত্রণ বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আওলিয়ার রহমান জানান, ভারতে আটকে পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা দর্শনা বন্দর হয়ে মোট ৬৯৩ জন বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁদের ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের রেড জোনে রাখা হয়েছে।