চ্যাম্পিয়ন ঢাকার সেন্ট যোসেফ

গ্রামীণফোন–প্রথম আলো আই–জেন ২০১৫–এর চূড়ান্ত পর্বে বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। পাশে উপস্থাপক মারিয়া নূর। মঞ্চে রয়েছে চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণকারী চারটি দল: (বাঁ দিক থেকে) সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, চট্টগ্রামের সিলভার বেলস কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড গার্লস হাইস্কুল, বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ এবং হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় l প্রথম আলো
গ্রামীণফোন–প্রথম আলো আই–জেন ২০১৫–এর চূড়ান্ত পর্বে বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। পাশে উপস্থাপক মারিয়া নূর। মঞ্চে রয়েছে চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণকারী চারটি দল: (বাঁ দিক থেকে) সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, চট্টগ্রামের সিলভার বেলস কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড গার্লস হাইস্কুল, বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ এবং হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় l প্রথম আলো

‘কম্পিউটারে স্মৃতি কত প্রকারের’, ‘জি-মেইল ব্যবহারকারীরা প্রাথমিকভাবে কত জিবি স্টোরেজ পান’, ‘আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে’‍—তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেট-সম্পর্কিত এ ধরনের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর অবলীলায় দিয়ে যাচ্ছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি জীবন থেকে নেয়া চলচ্চিত্রের পরিচালক কে কিংবা এবারের অস্কারে সেরা অভিনেত্রী কে হয়েছেন—এসব প্রশ্নের উত্তরেও তারা সপ্রতিভ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার হল-৪-এ (নবরাত্রি হল) গ্রামীণফোন-প্রথম আলো আই-জেনের গ্র্যান্ড ফিনালের (চূড়ান্ত পর্ব) আসরে প্রতিযোগীরা তাদের প্রতি ছুড়ে দেওয়া নানা প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিল সপ্রতিভভাবে।
তাদের প্রতিভায় মুগ্ধ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বললেন, ‘আই-জেন প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের বিপুল অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে যে আমাদের নতুন প্রজন্ম জ্ঞান ও মেধার দিক থেকে বিশ্বমানের। শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে আই-জেন প্রতিযোগিতার আয়োজন ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্য নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে তৈরি করা। আমরা যখন ২০১০ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করি, তখন অনেকেই সমালোচনা করেছেন। এখন দেশে এমন কোনো স্কুল নেই, যেখানে একটিও ল্যাপটপ নেই। এ প্রতিযোগিতায় বিপুলসংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণই প্রমাণ করে, সেটার সুফল আছে।’

আই-জেনে অংশ নিয়েছে দেশের ২ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ৮ লাখ ৭০ হাজার প্রতিযোগী। দীর্ঘ ১০ মাস ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির নানান প্রশিক্ষণ আর চার ধাপের প্রতিযোগিতা শেষে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকে চারটি স্কুল দল৷ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চট্টগ্রামের সিলভার বেলস কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড গার্লস হাইস্কুল, বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ এবং ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছে যায়। আর দর্শকদের ভোটে ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রিতে চূড়ান্ত পর্বে সুযোগ পায় হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কণার গাওয়া আই-জেনের টাইটেল মিউজিকের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য দেন গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হাসান। তিনি বলেন, গ্রামীণফোন এখন শুধু টেলিফোনসেবার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। নানা রকম ডিজিটাল সেবা আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করছে। তাই তাঁরা সেসব সেবাও দিচ্ছেন। ইন্টারনেট সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির অংশ হিসেবে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন।

চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, ‘আমরা তরুণদের নিয়ে পথ চলতে চাই। তরুণদের সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সহযাত্রী হতে চাই।’

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের একটাই এজেন্ডা—বাংলাদেশের জয়। আজ বাংলাদেশ নানা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে অবদান তরুণদের। দেশকে এগিয়ে নিতে তরুণদের হাতে থাকতে হবে প্রযুক্তি। আমাদের উদ্দেশ্য তরুণেরা ইন্টারনেটের সাহায্যে বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হবে, নিজেরা এগিয়ে যাবে, দেশকে এগিয়ে নেবে। তিনি আরও বলেন, শহরের তরুণদের পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশু-কিশোরদেরও প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করা উচিত।

এরপর কয়েকটি পর্বে প্রতিযোগীরা মেধার পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল। প্রথম রানারআপ হয়েছে হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় এবং দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল। প্রতিযোগিতার সেরা হিসেবে সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের পাঁচ প্রতিযোগী পেয়েছেন ২৫ লাখ টাকার পুরস্কার ও একটি করে ল্যাপটপ। ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের সৌজন্যে পাঁচ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। এ ছাড়া স্কুল পাচ্ছে একটি ইন্টারনেট ল্যাব। প্রথম রানারআপ ও দ্বিতীয় রানারআপ পেয়েছে যথাক্রমে ১০ লাখ ও ৫ লাখ টাকার পুরস্কার।

মারিয়া নূরের উপস্থাপনায় প্রতিযোগিতার ফাঁকে ফাঁকে সংগীত পরিবেশন করেন বাপ্পা মজুমদার এবং নাচে অংশ নেন অভিনেত্রী মেহজাবিন।

গ্রামীণফোন ও প্রথম আলোর উদ্যোগে আই-জেন ২০১৫ আয়োজনে সহযোগিতা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সহযোগী হিসেবে আরও ছিল অ্যালপেনলিবে, মাইক্রোসফট, অপেরা মিনি, এখানেইডটকম, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, উরি ব্যাংক, রেডিও ফুর্তি ও চ্যানেল আই। অনুষ্ঠানের দিন মেকআপ পার্টনার ছিল পারসোনা।