জন্মদিনে হঠাৎ দেখা নন্দিতা

গতকাল রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আড্ডার ফাঁকে নন্দিতা দাস।  ছবি: হাসান ইমাম
গতকাল রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আড্ডার ফাঁকে নন্দিতা দাস। ছবি: হাসান ইমাম

‘দেখেছেন, আমি কিন্তু কথা রাখলাম। খুব চেষ্টা করেছি গত কয়েক মাসে ছবিটা এ দেশে নিয়ে আসার জন্য।’ স্নিগ্ধমাখা হাসি দিয়ে বললেন নন্দিতা দাস। গত মে মাসের কথা। ৭১তম কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে মান্টো ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কথা দিয়েছিলেন এই পরিচালক, মান্টো নিয়ে অবশ্যই বাংলাদেশে আসবেন। কথা রেখেছেন নন্দিতা। গতকাল ঢাকায় এসেছেন তিনি। আজ তাঁর সেই মান্টো ছবির প্রদর্শনী বাংলা একাডেমিতে।

নন্দিতা দাসের সঙ্গে দেখাটা একেবারেই হঠাৎ করে। ঢাকা লিট ফেস্টের সংবাদ সংগ্রহের কাজে গতকাল রাত ৯টার দিকে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে যাওয়া। তখনই হোটেলের লবিতে চেনা একটি মুখে আটকে যায় চোখ। মুখটি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর। সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য এগিয়ে যেতেই এক বিরাট বিস্ময়। তাঁর পাশে বসে আছেন ভারতীয় অভিনেত্রী ও নির্মাতা নন্দিতা দাস। দুই দেশের দুই নির্মাতার মধ্যে চলছিল তুমুল সিনেমাটিক আলাপ! সেই আলাপে জুড়ে যাই আমরাও। বলে রাখি, গতকাল ৭ নভেম্বর ছিল ভারতীয় চলচ্চিত্রের এই বিকল্পধারার অভিনেত্রী ও নির্মাতার ৪৯তম জন্মদিন। কথায় কথায় বললেন, ‘আমি জন্মদিন আলাদা করে পালন করি না কখনোই। আমার সব রোমাঞ্চ মান্টোর স্ক্রিনিং (প্রদর্শনী) ঘিরে। কী যে হবে কাল (আজ)!’

আজ বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে ঢাকা লিট ফেস্টে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো হবে নন্দিতা দাস পরিচালিত মান্টো ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনী। প্রদর্শনী শেষে এই নির্মাতা দর্শকের প্রশ্নের জবাব দেবেন। মান্টো ছবিটি উর্দু সাহিত্যের অন্যতম কান্ডারি সাদাত হাসান মান্টোর জীবন নিয়ে নির্মিত। এতে মান্টো চরিত্রে অভিনয় করেছেন নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী। নন্দিতা জানালেন, নওয়াজের বাংলাদেশে আসার ইচ্ছা ছিল খুব। তবে একই সময় নেটফ্লিক্সের ‘স্যাকরেড গেমস’ সিরিজের দ্বিতীয় কিস্তির শুটিং পড়ে যাওয়ায় আর আসা হয়নি।

গত ১৩ মে ৭১তম কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এ ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়। এটি ছিল এ বছর উৎসবের আনুষ্ঠানিক বিভাগ আঁ সারতেঁ রিগার-এ নির্বাচিত ভারতের প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র ছবি।

নন্দিতা আর ফারুকীর আলাপ যখন তুঙ্গে, তখন পাপারাজ্জির মতো ক্যামেরা চলছিল আমাদের। আর লাজুক ভঙ্গিতে ফারুকী বলছিলেন, ‘আমার ছবি তুলবেন না প্লিজ। এটা পত্রিকায় ছাপা হলে লোকে ভাববে এখানে বুঝি খুব পরিকল্পনা করে সাক্ষাৎকারপর্বটি গোছানো হয়েছে। কেউ বুঝবেও না এই কাকতালটি।’

তবে এসব কাকতাল বোঝাবুঝির ঊর্ধ্বে নন্দিতা দাস রাখতে চান তাঁর মান্টোকে। আমরা যখন এই হঠাৎ দেখার ঘটনা পত্রিকায় ছাপব কি না, এর অনুমতি নিতে যাই তাঁর কাছে তখন পুরোদস্তুর সিনেমার ফেরিওয়ালার মতোই নন্দিতা বলেন, ‘যদি এই কাকতাল মান্টো দেখার জন্য দর্শককে হল অবধি নিয়ে আসে, আমি তাতেই খুব খুশি। লিখুন না, মজাই হবে!’