জমা পড়ছে জাল পে-অর্ডার

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়নকাজের দরপত্রের সঙ্গে জাল পে-অর্ডার জমা দিচ্ছে একশ্রেণীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে সাধারণ ঠিকাদারেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ গত সাত মাসে দুই দফায় ১৬টি জাল পে-অর্ডার জব্দ করেছে। ২৪ নভেম্বর জব্দ করা হয় ১৩টি এবং গত মে মাসে জব্দ করা হয় তিনটি। আর ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল জব্দ করা হয়েছিল ১২টি।
সূত্র জানায়, করপোরেশন এ অভিযোগে আটটি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত এবং একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
করপোরেশন সূত্র জানায়, কোনো দরপত্রের সঙ্গে জামানত হিসেবে প্রকল্প ব্যয়ের আড়াই শতাংশ অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা দিতে হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।
করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মোখতার আলম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী জাল পে-অর্ডার জমা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা এড়াতে এই প্রথম সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংক থেকে স্বল্প মেয়াদে ঋণ নিয়ে দরপত্রে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের জমা দেওয়া জাল পে-অর্ডার ধরা পড়লে দরপত্রের লটারি পিছিয়ে যায়। এ জন্য কাজ শুরু হয় নির্দিষ্ট সময়ের পরে। আর নির্ধারিত সময়ে পে-অর্ডার ফেরত না পাওয়ায় ব্যাংকের সুদ বৃদ্ধি পায়।’
করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ ২৪ নভেম্বর ১৩টি উন্নয়নকাজের বিপরীতে নূর মোহাম্মদ অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জমা দেওয়া ১৩টি জাল পে-অর্ডার জব্দ করে। এ ঘটনায় করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম ২৫ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল ১২টি জাল পে-অর্ডার জব্দ করা হয়। ফতেয়াবাদে একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণ, রাস্তাঘাট সংস্কারসহ পাঁচটি উন্নয়নকাজের দরপত্রের সঙ্গে এসব পে-অর্ডার জমা দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ভুয়া পে-অর্ডার ব্যবহার করে এমআর এন্টারপ্রাইজের নামে তিনটি, আর জাহানের নামে দুটি, স্টার এজেন্সির নামে চারটি এবং আবেদীন এন্টারপ্রাইজের নামে তিনটি কাজের শিডিউল কেনা হয়।
সূত্র জানায়, গত মে মাসে জাল পে-অর্ডার জমা দিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকার কাজ পেয়েছিল তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে যাচাই করে পে-অর্ডারগুলো জাল প্রমাণিত হওয়ায় সেই সব প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া কার্যাদেশ বাতিল করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।
ঠিকাদার গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, গুটি কয়েক প্রতিষ্ঠানের কারণে দুর্নামের ভাগীদার হতে হচ্ছে সবাইকে। আর ঠিকাদারদের বিশ্বাসযোগ্যতাও নষ্ট হচ্ছে।