জাতিসংঘের প্রতি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ১০ মানবাধিকার সংস্থার

বাংলাদেশ সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ‘নির্যাতন ও নিষ্ঠুর আচরণের’ ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ ১০টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিত ব্যক্তিদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসে শনিবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনগুলো। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গ্রেপ্তার এবং সন্দেহভাজন লোকজনের ওপর নির্যাতন ও নিষ্ঠুর আচরণ করছে।

বিবৃতিতে বন্দীদের ওপর যেসব নির্যাতন করা হয়, তার একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছে। সেসবের মধ্যে রয়েছে লোহার রড, বেল্ট ও লাঠি দিয়ে পেটানো; কান ও যৌনাঙ্গে বৈদ্যুতিক শক, নাক-মুখ ঢেকে পানি ঢালা (ওয়াটার বোর্ডিং), সিলিংয়ে ঝুলিয়ে পেটানো, পায়ে গুলি করা, কানের কাছে জোরে শব্দ করা বা গান বাজানো, মৃত্যু কার্যকরের নাটক সাজানো এবং নগ্ন করে রাখার মতো ঘটনা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে শত শত মানুষ গুম বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার কর্মী, আন্তর্জাতিক গ্রুপ ও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ—সবাই হেফাজতে নির্যাতনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। তার জবাবে শুধু অস্বীকার আর মিথ্যা বক্তব্য এসেছে। কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের নেতারা সংস্কারের কথা বলেছেন। কিন্তু প্রতিটি সরকারই এ ধরনের বর্বরতা বাড়িয়েছে, নির্যাতনের সংস্কৃতি চালু করেছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে দায়মুক্তি দিয়ে এসেছে।’

বিবৃতিতে গত ফেব্রুয়ারিতে কারাবন্দী অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমদের মৃত্যুর ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে কারাবন্দী হয়ে মুক্তি পাওয়া কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের বরাত দিয়ে বন্দী অবস্থায় দুজনের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা উচিত।