জাপান থেকে আসা দুই শিশুর মা–বাবার করা অবমাননার আবেদনের শুনানি ২ জুন
জাপান থেকে আসা দুই শিশুর বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অনুসরণ না করার অভিযোগ তুলে তাদের মা এরিকো নাকানো ও বাবা ইমরান শরীফের পরস্পরের বিরুদ্ধে করা পৃথক আদালত অবমাননার আবেদনের ওপর ২ জুন শুনানি হবে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার শুনানির এ তারিখ ধার্য করেন।
দুই শিশুর স্কুলের গ্রীষ্মকালীন ছুটি সামনে রেখে জাপান ভ্রমণের অনুমতি চেয়ে তাদের মা জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানোর করা আবেদনও একই দিন (২ জুন) একসঙ্গে শুনানির জন্য আসবে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ সিদ্ধান্ত দেন, ঢাকার পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটির (শিশুদের বাবার করা) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের হেফাজতে থাকবে। শিশুদের বাবা তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন।
আপিল বিভাগের এই আদেশ অনুসরণ না করার অভিযোগ তুলে মা এরিকো নাকানো গত ২৪ এপ্রিল শিশুদের বাবা ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন।
অন্যদিকে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারির আদেশ অনুসরণ না করার অভিযোগ তুলে শিশুদের বাবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরান শরীফ ১৬ মে এরিকো নাকানোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন।
দুই শিশুর গ্রীষ্মকালীন ছুটি সামনে রেখে জাপান ভ্রমণের অনুমতি চেয়ে এরিকো নাকানো আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১৭ মে একটি আবেদন করেন।
ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে এরিকো নাকানোর করা আদালত অবমাননার আবেদনটি আজ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে।
দুই পক্ষের আইনজীবীরা পৃথক তিনটি আবেদনের বিষয় শুনানির জন্য আজ আদালতে উপস্থাপন করেন। পরে আপিল বিভাগ আগামী ২ জুন শুনানির তারিখ ধার্য করেন।
আদালতে এরিকো নাকানোর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আকতার ইমাম, আইনজীবী রাশনা ইমাম ও কামাল হোসেন।
পরে এরিকো নাকানোর অন্যতম আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, ‘পৃথক তিনটি আবেদন একসঙ্গে শুনানির জন্য ২ জুন দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ।’
২০০৮ সালের ১১ জুলাই এরিকো নাকানো ও ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। তাঁদের তিনটি মেয়েসন্তান রয়েছে।
গত বছরের ১৮ জানুয়ারি এরিকো নাকানোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান শরীফ। গত বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ছোট মেয়ে জাপানে রয়েছে। ইমরানের কাছ থেকে দুই মেয়েশিশুকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে গত বছরের ১৯ আগস্ট রিট করেন এরিকো নাকানো।
অন্যদিকে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে আরেকটি রিট করেন ইমরান শরীফ। পৃথক রিটের ওপর শুনানি নিয়ে দুই শিশু তাদের বাবা ইমরান শরীফের হেফাজতে থাকবে বলে গত ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট আদেশ দেন।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে শিশুদের মা এরিকো নাকানো লিভ টু আপিল করেন। তার নিষ্পত্তি করে শিশুরা মায়ের কাছে থাকবে, আর তাদের বাবা শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন বলে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ।