জাবিতে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ৫ জানুয়ারি, বেলা ১টা। ছবি: প্রথম আলো
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ৫ জানুয়ারি, বেলা ১টা। ছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বেলা একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ও অনুষদ ভবন ঘুরে মুরাদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

সমাবেশে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক খবির উদ্দিন বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে, সেটা উদ্‌ঘাটন করার জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। ইতিমধ্যে আমরা দুর্নীতির সব প্রমাণপত্র গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছি। কিন্তু তদন্তের ব্যাপারে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। আশা করছি, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুস্মিতা মরিয়ম বলেন, ‘সারা দেশে দুঃশাসনের যে রাজনীতি চলছে, তার অংশ হিসেবে প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছাত্রলীগ দ্বারা দখলদারির রাজত্ব কায়েম করেছে। আমরা দেখেছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কীভাবে পাবলিকের টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে ছাত্রলীগকে প্রদান করেছেন। দুর্নীতিবাজ উপাচার্য ও তাঁর সহযোগীদের এই ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়ন করার মাধ্যমেই জাহাঙ্গীরনগর কলঙ্কমুক্ত হবে।’

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার কোনো বিচার হয়নি। আমরা যে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলাম, সেটার কোনো ধরনের তদন্ত হয়নি। আমরা বারবার শুনছি, ঘটনার তদন্ত চলছে, কিন্তু তদন্তের কোনো আলামত দেখছি না। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের কাছে অনুরোধ করছি, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দুর্নীতিবাজ উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ করুন।’

সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমানের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সংগঠক জাহাঙ্গীর আলম।

উপাচার্যের ‘মধ্যস্থতায়’ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে ছাত্রলীগকে বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগের তদন্তের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। গত ২৩ আগস্ট শুরু হওয়া এ আন্দোলন ১৮ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের পদত্যাগ দাবির আন্দোলনে রূপ নেয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করায় গত ২ অক্টোবর থেকে আন্দোলন মোড় নেয় উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে। ১০ দিন উপাচার্যের কার্যালয় অবরুদ্ধ রাখার পর ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। পরদিন ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীরা তাঁদের পিটিয়ে সরিয়ে দেন। সেদিনই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও আন্দোলন অব্যাহত রাখেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।