জাহাঙ্গীরনগর, আবারের অপেক্ষা একদিন শেষ হবে

করোনা মহামারির কারণে বন্ধ আছে সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ব্যতিক্রম নয় আমার প্রাণের ক্যাম্পাস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও। লকডাউনে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাসের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করা হচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। প্রায় সাত শ একরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার থেকে সবাই এখন ঘরবন্দী।

সবার স্বপ্ন একটাই। একদিন করোনামুক্ত হবে পৃথিবী। খুলবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেদিন ক্লাস শেষে আবারও ছায়ামঞ্চে আসর বসাব, টারজানে সবাই মিলে ফুচকা খাব, মুক্তমঞ্চ থেকে হাজারো গান গাইতে গাইতে ক্যাম্পাসের ‘রাঙামাটি’ যাব। টিলাঘেঁষা ব্রিজটাতে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে আবারও সূর্যাস্ত দেখব। চৌরঙ্গীর জলে পড়া নানা রঙের লাইটের আলো, কলকল শব্দের ঢেউ আর উদ্দাম হাওয়া গায়ে লাগাতে লাগাতে পাড়ে বসে গাইব, ‘ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখো’।

আবারও একদিন প্রচণ্ড ক্লান্তি নিয়ে ক্যাম্পাসের শান্তিকুঞ্জে প্রাণ জুড়াব, হলের পুকুর কিংবা ক্যাম্পাসের সুইজারল্যান্ডের জলে লাফিয়ে পড়ব!

একদিন আবারও বটতলায় চায়ের আসর জমাব। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে শুরু হয়ে যাবে দেশ–বিদেশের নানা বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্ক। সন্ধ্যায় সেলিম আল দ্বীন মুক্তমঞ্চে বসে উপভোগ করব জমকালো সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শিরোনামহীন, শুন্য, রাফা, চিরকুট, মাইলস কিংবা আর্টসেলের সঙ্গে গলা মিলিয়ে গাইব ‘দুর্গম গিরি, কান্তার–মরু, দুস্তর পারাবার/ লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি–নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার!’

আবারও একদিন গভীর রাতে নৈসর্গিক জাহাঙ্গীরনগর দেখতে বের হব। ক্যাম্পাসের সুইজারল্যান্ডে বসে আবারও সবাই একসঙ্গে পূর্ণিমা রাতে জলের স্বর্গীয় সৌন্দর্য দেখে অবাক তাকিয়ে রব।

‘আবারের’ অপেক্ষা একদিন শেষ হবেই, হতেই হবে।

*প্রথম বর্ষ, জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]